ধর্মপাশায় এক কিশোরীর বাল্যবিবাহ বন্ধ করল প্রশাসন

বাল্যবিবাহ
প্রতীকী ছবি

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার একটি গ্রামে এক কিশোরী (১৬) বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই বাল্যবিবাহ বন্ধ হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরী চলতি বছরে স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হয়। ওই কিশোরীর সঙ্গে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার এক যুবকের (২৫) বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ে উপলক্ষে কনের বাড়ির প্রবেশদ্বারে একটি গেট তৈরি করা হয়। বর, বরযাত্রীসহ আত্মীয়স্বজনকে খাওয়ানোর জন্য কেনা হয় একটি ষাঁড় ও ৮০টি মোরগ। আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যায় ওই কিশোরীর গায়েহলুদ ও পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। আজ বেলা একটার দিকে বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত উপজেলা শিশু ফোরাম নামের একটি সংগঠনের একজন সদস্য বাল্যবিবাহ আয়োজনের খবরটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীনকে মুঠোফোনে জানান। ইউএনও তাৎক্ষণিকভাবে খোঁজ নিয়ে এই বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অলিদুজ্জামানকে নির্দেশ দেন।

আজ সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অলিদুজ্জামান কনের বাড়িতে উপস্থিত হন। তিনি সেখানে গিয়ে দেখেন, কাগজপত্রে ওই কিশোরীর জন্মতারিখ ২০০৮ সালের ৭ মে। এ সময় ওই কিশোরীর বাবা ও মা বাড়িতে ছিলেন না। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওই কিশোরীর প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনকে ডেকে এনে বাল্যবিবাহের কুফল ও এই আইনবিরোধী এমনটি বুঝিয়ে বলার পর কিশোরীর চাচা ১৮ বছরের আগে তাঁর ভাতিজিকে বিয়ে দেবেন না বলে লিখিতভাবে অঙ্গীকার করেন।

কিশোরীর চাচা বলেন, ‘আমরা ভুল করে ফেলেছি। এ জন্য আমরা অনুতপ্ত। ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাকে বিবাহ দেব না।’

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অলিদুজ্জামান বলেন, উপজেলা শিশু ফোরাম নামের সংগঠনের একজন সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মীদের সহায়তায় এই বাল্যবিবাহ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। বাল্যবিবাহ রোধে উপজেলা প্রশাসন সব সময় তৎপর রয়েছে।