শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের
শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের

শেখ হাসিনা-ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে বগুড়ার আদালতে আরেকটি মামলা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে বগুড়ায় আরেকটি মামলা হয়েছে। বিস্ফোরকদ্রব্য আইন ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের ছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৪০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বগুড়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুকান্ত সাহার আদালতে মামলার আবেদন করেন জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের শাহীনুর ইসলাম ওরফে আলামিন (২৫) নামের এক তরুণ। তিনি নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিবগঞ্জ উপজেলার সমন্বয়ক বলে দাবি করেন। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মামলা হিসেবে রেকর্ড করার আদেশ দেন। মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুল ওহাব।

শিবগঞ্জ থানার ওসি আবদুর রউফ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, আদালতে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে একটি মামলার কথা তিনি মৌখিকভাবে শুনেছেন। মামলা নথিভুক্তের বিষয়ে এখনো আদালতের কোনো নির্দেশনা পাননি। কেউ মামলা করতে এখনো থানায়ও আসেননি।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কমর উদ্দিন নামের এক রিকশাচালক নিহতের ঘটনায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৮২ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়। মামলাটিতে ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। নিহত কমর উদ্দিনের স্ত্রী তহমিনা বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন। এ ছাড়া শিক্ষক সেলিম হোসেন (৩৫) হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ১০১ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা করা হয়।

বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের ছাড়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শরিফুল ইসলাম (জিন্নাহ), তাঁর ছেলে হুসাইন শরীফ, শ্যালক ও শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ (বিপুল) ও রেজ্জাকুল ইসলাম, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাহিমা বেগম, মাঝিহট্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এসকেন্দার আলী, বুড়িগঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, বিহার ইউপির চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম, দেউলি ইউপির চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম, কিচক ইউপির চেয়ারম্যান শাজাহান চৌধুরী, আটমূল ইউপির চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন, মোকামতলা ইউপির চেয়ারম্যান আহসান হাবিব, পিরব ইউপির চেয়ারম্যান আসিফ মাহমুদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু রায়হান, সাধারণ সম্পাদক আমানুল হক প্রমুখ।

আদালতে মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই বিকেলে শিবগঞ্জ উপজেলা সদরের নাগর বন্দর থেকে ছাত্র-জনতার মিছিল বের হয়। মিছিলটি প্রধান সড়ক হয়ে সোনালী ব্যাংক চত্বরে পৌঁছালে স্বৈরাচার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ১ ও ২ নম্বর আসামি শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে সাবেক সংসদ সদস্য শরিফুল ইসলাম ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদের নেতৃত্বে আসামিরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করেন। এ সময় তাঁরা ককটেল হামলা করেন এবং গুলিবর্ষণ করেন। এ সময় নাজমুল বাঁ হাতে ও পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় অন্য আসামিরা লাঠিসোঁটা, রড ও দেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা করেন। পরে আন্দোলনকারীরা ধাওয়া দিলে আসামিরা পালিয়ে যান। নাজমুলকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) ভর্তি করা হয়।