শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন এক গৃহবধূ। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর স্বামীও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। পরে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই মারা যান। গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার কুন্ডেরচর ইউনিয়নের মান্নান মল্লিককান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া দুজন হলেন আজিজুল মল্লিক (৫০) ও তাঁর স্ত্রী নিলুফা বেগম (৪৫)। তাঁরা জাজিরা উপজেলার পদ্মা নদীর চরাঞ্চল কুন্ডেরচর ইউনিয়নের মান্নান মল্লিককান্দি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, অসতর্কতার কারণে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দুটি হাস্তান্তর করা হয়। পরে লাশ দুটি দাফন করেছেন স্বজনেরা।
স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজিজুল মল্লিক কৃষিকাজ করে জীবিকানির্বাহ করেন। তাঁর স্ত্রী নিলুফা বেগমও কৃষি কাজে যুক্ত। গতকাল রাতে নিলুফা বসতঘরের একটি বৈদ্যুতিক সংযোগের তারের ছেঁড়া অংশে স্কচটেপ মোড়াচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এ দৃশ্য দেখে তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আজিজুল মল্লিকও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। পরে স্বজনেরা বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে অচেতন অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করেন। ইঞ্জিনচালিত নৌকায় পদ্মা নদী পার হয়ে দুজনকে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে রাত ৯টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজ রোববার সকালে দুজনের লাশ গ্রামে আনা হয়। বেলা ১১টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে স্বামী-স্ত্রীর লাশ দাফন করা হয়।
আজিজুল মল্লিকের চাচাতো ভাই বোরহান মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই-ভাবি দরিদ্র ও অসহায়। তাঁদের ৬ মেয়ে ও ১ ছেলে আছে। তেমন কৃষি জমিও নেই। এখন এই শিশু-কিশোর সন্তানদের কে দেখে রাখবেন? দুজনের এমন মৃত্যুতে তাঁরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
কুন্ডেরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন ব্যাপারী প্রথম আলোকে বলেন, আজিজুল মল্লিক ও তাঁর স্ত্রীর মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকাবহ অবস্থা তৈরি হয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হওয়ার পর দুজনকে হাসপাতালে নিতে দেরি হয়েছে। ফলে দ্রুত তাঁরা চিকিৎসা সেবাও পাননি।