দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় একই রশিতে মা–মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের আরাজি যুগিরঘোপা গ্রামের বেনুপাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে তাঁদের লাশ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ।
লাশ দুটির পাশ থেকে মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় বলে হাতে লেখা একটি চিরকুট পেয়েছে পুলিশ। তবে মৃত গৃহবধূর বাবার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
মৃত দুজন হলেন সুজাতা রানী রায় (২৪) ও তাঁর মেয়ে নীলাদ্রি রানী রায় (৬)। সুজাতা ওই গ্রামের ভক্ত রায়ের স্ত্রী ও পার্শ্ববর্তী পার্বতীপুর উপজেলার বিলাইচণ্ডী ইউনিয়নের বাঘাচড়া গ্রামের ঝাউপাড়ার অমিত্য রায়ের মেয়ে। তিনি পাকেরহাট সরকারি কলেজের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। সুজাতার স্বামী ভক্ত রায় পেশায় দরজি। স্ত্রী-সন্তানের মৃত্যুর পর আত্মগোপনে রয়েছেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে সুজাতা ও ভক্ত রায়ের বিয়ে হয়। বাড়িতে সুজাতা প্রতিদিন সন্ধ্যায় পূজা–অর্চনা করতেন। গতকাল সন্ধ্যায় বাতি না দেওয়া এবং পূজা–অর্চনা না দেখে তাঁর দেবরের বউ চন্দনা খোঁজ করতে যান। এ সময় ঘরের দরজা ভেতর থেকে আটকানো দেখতে পান চন্দনা। পরে তিনি আলো জ্বালিয়ে ঘরের চালে একই রশিতে মা-মেয়ে ঝুলন্ত মরদেহ দেখেন। চন্দনার চিৎকার শুনে পরিবারের অন্য সদস্য ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন।
বিষয়টিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছেন সুজাতার ভাই মিঠুন রায়। তিনি বলেন, ‘রাতে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যাই। তাঁদের পরিবারে অশান্তি লেগেই থাকত। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজমূল হক বলেন, এক রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছ। নিহত ব্যক্তিদের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে আছেন সুজাতার স্বামী ভক্ত রায়।