দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল নওগাঁর বদলগাছীতে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। হাড় কাঁপানো শীতে বিপাকে পড়েছেন এ জনপদের খেটে খাওয়া মানুষ। আজ শনিবার বদলগাছীতে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালে কুয়াশার পরিমাণ কমে রোদের দেখা মিললেও উত্তরের হিমেল বাতাস অব্যাহত থাকায় শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে।
বদলগাছী আবাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের উচ্চ পর্যবেক্ষক হামিদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল ৯টার দিকে বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত এটি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার কেকর্ড। এর আগে গত বৃহস্পতিবার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চলতি মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নওগাঁয় গতকাল শুক্রবার ও গত বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ১০ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা থাকলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৮ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আর তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। সে হিসাবে বদলগাছীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে।
তাপমাত্রা কমে যাওয়ার পাশাপাশি উত্তর থেকে আসা হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় নওগাঁয় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। শীতের কারণে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া লোকজন পড়েছেন বিপাকে। আজ সকালে নওগাঁ শহরের বিজিবি ব্রিজ এলাকায় কথা হয় ভ্যানচালক আবদুল মালেকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সকাল সকাল রোদ উঠিছি। কিন্তুক কনকনা বাতাসের কারণে খুব ঠান্ডা লাগোছে। ঠান্ডাত হাত-পা জড়ো হয়ে যাওছে। এমন ঠান্ডাত ল্যাপ গাওত দিয়ে শুয়ে থাকলে ভালো লাগত। কিন্তু প্যাটত খিদা থাকলে কি আর বাড়িত আরামে থাকা যায়?’
শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত হাসপাতালের শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৬০টি শিশু ভর্তি ছিল। কয়েক দিনে সর্দি, জ্বর, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শয্যাসংকটের কারণে কোনো কোনো বেডে দুই শিশুকে রাখা হয়েছে। অনেক রোগীকে ওয়ার্ড ও করিডরের মেঝেতে জায়গা দিতে হয়েছে।
নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জাহিদ নজরুল ইসলাম বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শীত বাড়ায় শিশু ও বয়স্কদের ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।