সিলেটের জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের প্রায় সাড়ে তিন বছর পর আদালতের রায়ে মেয়র পদ ফিরে পেয়েছিলেন ফারুক আহমদ। ১৩ আগস্ট শপথ নিয়ে পরদিন থেকে দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। পাঁচ দিন পর আবার পদ হারিয়েছেন তিনি।
গতকাল সোমবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের পাশাপাশি দেশের ৬০টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সব পৌরসভার মেয়রকে অপসারণ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এর ফলে ফারুক আহমদও মেয়র পদ হারিয়েছেন। তিনি জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক।
এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার ফারুক আহমদ বলেন, তিনি নির্বাচনে বিজয়ী হলেও কারচুপির মাধ্যমে তাঁকে পরাজিত করা হয়েছিল। আদালতের শরণাপন্ন হয়ে দীর্ঘদিন পর ন্যায়বিচার পেয়েছিলেন। তিনি দেশের অন্য পৌরসভার মেয়রদের মতো এত দিন দায়িত্বপালন করেননি। তাঁর বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ জন্য তাঁকে যাতে সুযোগ দেওয়া হয়, এ ব্যাপারে আদালতের দ্বারস্থ হবেন। এ বিষয়ে তিনি আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করছেন।
ফারুক আহমদ বলেন, ‘১৩ আগস্ট শপথ নেওয়ার পর ১৪ আগস্ট থেকে দায়িত্বপালন করেছি। এর মধ্যে শুক্র–শনিবারসহ মোট পাঁচ দিন দায়িত্বে ছিলাম। গত পাঁচ দিনে কোনো বিশেষ কাজও করতে পারিনি। গতকাল পৌরসভার কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলাম। তখন পৌরসভার মেয়রদের অপসারণের খবর পাই। এরপর পৌরসভা কার্যালয় ত্যাগ করি।’
১৩ আগস্ট শপথ নেওয়ার পর ১৪ আগস্ট থেকে দায়িত্বপালন করেছি। গতকাল পৌরসভার কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলাম। তখন পৌরসভার মেয়রদের অপসারণের খবর পাই। এরপর পৌরসভা কার্যালয় ত্যাগ করি।ফারুক আহমদ, জকিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র
২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হয়। এতে বেসরকারভাবি বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আবদুল আহাদকে। দুই ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন ফারুক আহমদ।
তবে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ওই বছরই সিলেট যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ফারুক আহমদ। মামলায় পাঁচটি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল পুনর্গণনার আবেদন করেন তিনি। উভয় পক্ষের
আইনজীবীদের উপস্থিতিতে কয়েক দফায় আদালতে ভোট পুনরায় গণনা করা হয়। বাদী ও বিবাদীপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। পুনরায় ভোট গণনায় ফারুক আহমদ চার ভোট বেশি পেয়েছেন বলে ২০২৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১৯ অক্টোবর আবদুল আহাদ সিলেটে আপিল মামলা দায়ের করেন। শুনানি শেষে চলতি বছরের ৫ জুন সিলেটের আপিল আদালতের বিচারক এবং জেলা ও দায়রা জজ এ কিউ এম নাছির উদ্দীন দরখাস্তকারী আবদুল আহাদকে ৬ ভোটে পরাজিত ঘোষণা করেন। নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায় বহাল রেখে ফারুক আহমদকে বিজয়ী ঘোষণা করে আবদুল আহাদের আবেদন খারিজ করেন বিচারক। ওই আদেশের পর নির্বাচন কমিশন জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ফারুক আহমদকে বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে।