খুলনায় ইউপি চেয়ারম্যান হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতাসহ দুজন রিমান্ডে

খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য আজগর বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শরফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলামকে হত্যা মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য আজগর বিশ্বাসসহ দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন করে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে খুলনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান তামান্না পুলিশের করা রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।

গতকাল সোমবার দুপুরে খুলনা নগরের রায়েরমহল এলাকায় নিজের ব্যবসায়িক কার্যালয় থেকে আজগর বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার অন্যজন হলেন ডুমুরিয়ার গুটুরিয়া গ্রামের সাইদুর রহমান ওরফে বাবু। পুলিশের ভাষ্য, বাবু একজন চিহ্নিত খুনি। তাঁকে সোমবার সকালে নিজ বাড়ি থেকে তুলে আনা হয়।

খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুরে দুজনকে আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছিল। আদালত দুজনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আজ দুপুরে আজগর বিশ্বাস ও সাইদুর রহমানকে আদালতে আনা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহিন ঘটনা তুলে ধরে প্রকৃত তথ্য উদ্‌ঘাটনের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিনের আবেদন করেন। দুই পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক আসামিদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আজগর বিশ্বাস আবাসন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তিনি ‘বিশ্বাস প্রোপার্টিজ’ নামের একটি আবাসন প্রকল্পের মালিক। এবার ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বর্তমান চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের কাছে তিনি পরাজিত হন। নিহত রবিউল ইসলাম উপজেলা নির্বাচনে এজাজ আহমেদের পক্ষে কাজ করেছিলেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, গতকাল আজগর বিশ্বাসকে তাঁর ব্যবসায়িক কার্যালয় বিশ্বাস প্রোপার্টিজ থেকে তুলে নেয় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাঁর লাইসেন্স করা ১টি শটগান, ৫৬টি শটগানের গুলি ও ৯টি গুলির খোসা জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ৯টি গুলি কোন কাজে ব্যবহার করেছেন, তার কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তিনি। এমনকি গুলি ব্যবহার করার পর নিয়মানুযায়ী থানায় লিখিতভাবে জানানোর কথা থাকলেও তা করেননি। ওই শটগান থেকে রবিউল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে।

শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে শরফপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ওই সময় তিনি ডুমুরিয়া থেকে মোটরসাইকেলে করে খুলনার বাসায় ফিরছিলেন। স্ত্রীর চাকরির সুবাদে তিনি খুলনা নগরের নিরালা আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীরা চলন্ত মোটরসাইকেলের পেছন থেকে গুলি করে তাঁকে হত্যা করে।

এ ঘটনায় রোববার রাতে রবিউল ইসলামের স্ত্রী শায়লা ইরিন বাদী হয়ে ডুমুরিয়া থানায় মামলা করেন। মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে নির্বাচনকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব থেকে রবিউলকে খুন করা হতে পারে বলে এজাহারে লেখা হয়।