জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য নতুন প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য নতুন প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর-প্রাধ্যক্ষের অব্যাহতিসহ পাঁচ দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি, নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাঁদের প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতিসহ পাঁচ দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য নতুন প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করা হয়েছে।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ সোমবার সকাল পৌনে ৯টা থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ’-এর ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবরোধ শুরু করেন। এ সময় কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

আন্দোলনকারীদের অন্য দাবিগুলো হলো মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্ত করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা, নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমানের (জনি) বহিষ্কারাদেশের প্রজ্ঞাপন জারি ও অফিস আদেশ প্রণয়ন করতে হবে এবং ইতিপূর্বে যৌন নিপীড়ন সেলে উত্থাপিত সব অমীমাংসিত অভিযোগসহ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা, মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে জড়িত ব্যক্তিদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনের দুটি ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবরোধ করছেন একদল শিক্ষার্থী। তাঁদের সামনে প্রশাসনিক ভবনের কর্মকর্তারা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। কোনো কোনো কর্মকর্তা পাশের চায়ের দোকানে বসে অপেক্ষা করছেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একজন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণের যে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল, গতকাল রোববার সেটি সিন্ডিকেটে উত্থাপন করা হয়েছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, ওই তদন্ত প্রতিবেদনে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও সিন্ডিকেট যথাযথভাবে পর্যালোচনা করেনি। উপরন্তু তাঁরা বলেছেন প্রক্টর এবং প্রভোস্টের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণস্বরূপ কোনো কিছু পাননি। এটা হতেই পারে না। কারণ, আমরা তথ্যপ্রমাণ দিয়েছি, উপস্থাপন করেছি। কিন্তু তাঁরা যেহেতু বলেছেন, তথ্যপ্রমাণ পাননি, এটা দুরভিসন্ধিমূলক। গতকাল সিন্ডিকেট সভা চলাকালে আমরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করছিলাম; উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। এসব কারণে আমরা আজ সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ করে রেখেছি। যত দিন দাবি পূরণ না হবে, তত দিন এই অবরোধ থাকবে।’

এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য নূরুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি মুঠোফোন ধরেননি।

অবরোধকারীদের আরেকজন ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসিব জামান বলেন, ‘মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট এবং প্রক্টরের ব্যাপারে গত পরশু একটা অভিযোগপত্র দিয়েছি। যে নিপীড়নের কারণে একজন শিক্ষককে (মাহমুদুর রহমান) বরখাস্ত করা হয়েছে, সেই ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীকে দায়মুক্তিপত্র লেখানোর অভিযোগ রয়েছে প্রক্টরের বিরুদ্ধে। তারপরও প্রক্টরের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’