ঘন কুয়াশা ও শীতে শহরে মানুষের আনাগোনা কম। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী-নওগাঁ সড়কের বিমান চত্বর এলাকায়
ঘন কুয়াশা ও শীতে শহরে মানুষের আনাগোনা কম। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী-নওগাঁ সড়কের বিমান চত্বর এলাকায়

রাজশাহীতে দুপুরেও সূর্যের দেখা মেলেনি, জেঁকে বসেছে শীত

রাজশাহীতে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ও কুয়াশায় শীত জেঁকে বসেছে। আজ সোমবার সকাল থেকেই ঘন কুয়াশা দেখা দেয়। বৃষ্টির মতো কুয়াশাও ঝরেছে। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি।  

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন রোববার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অগ্রহায়ণ মাসের শেষ দিকে এসে রাজশাহীতে এমন কুয়াশার দেখা মিলল। তবে প্রায় এক সপ্তাহ ধরেই রাজশাহীতে সকাল–বিকেলসহ রাতের তাপমাত্রা কম ছিল। তবে ঝলমলে রোদ ছিল।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক রহিদুল ইসলাম বলেন, আজ সারা দিন আবহাওয়ার পরিস্থিতি এমনই থাকবে। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ও বিকেলেও তাপমাত্রা কম থাকবে।

হঠাৎ তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ বিপাকে পড়েছেন। রোদ না ওঠায় শহরে মানুষের আনাগোনাও কমেছে। যাঁরা বের হয়েছেন, মোটা ও গরম কাপড় পরে এসেছেন।

নগরের চৌদ্দপায় এলাকায় চায়ের দোকানে জড়সড় হয়ে বসে ছিলেন কয়েকজন ডাব বিক্রেতা। তাঁরা সেখান থেকে ডাব কিনে নগরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেন। আমজাদ হোসেন নামের একজন বলেন, ‘মনে হচ্ছে, আজ রোদ উঠবে না। ডাব কিনে ভুলই করলাম নাকি!’

নগরের তালাইমারী এলাকায় দিনমজুর রবিউল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়। বেলা ১১টা পর্যন্ত তিনি কাজের অপেক্ষায় ছিলেন ডালি ও কোদাল নিয়ে। তিনি বলেন, ‘খুব ভোর থেকেই আজ কুয়াশা। এবারে মনে হচ্ছে প্রথম ঠান্ডা পড়ল। কাজ না পেয়ে চলে যাচ্ছি। এই ঠান্ডার মধ্যে কাজ পাওয়া কঠিন।’  

নগরের কুমারপাড়া এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক জিতেন্দ্র সরকারের সঙ্গে। তাঁর পরনে গরম কাপড়। তিনি বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তেমন ভাড়া পাননি। মানুষ কম আজ শহরে। শীতে একটু কমই মানুষ বের হয়। কয়েক দিন পর অভ্যস্ত হয়ে পড়লে হয়তো বের হবে মানুষ।

এদিকে শীত জেঁকে বসায় রাজশাহী নগরের মোড়ে ও ফুটপাতে শীতের কাপড়ের বিক্রি বেড়েছে। সাধারণত দুপুরের পর থেকে এসব জায়গায় বেচাকেনা শুরু হয়। তবে আজ সকাল থেকেই কাজে নেমে পড়েছেন বিক্রেতারা। নগরের রানীনগর এলাকায় বিভিন্ন ধরনের কম্বল নিয়ে বসেছেন সাজু আহমেদ। তাঁর মতো সেখানে আরও কয়েকজন বিক্রেতা রয়েছেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে বেচাবিক্রি হচ্ছিল।

সাজু বলেন, শীত পড়ে গেছে। এখন বিক্রিও বেড়ে যাবে। তাঁর দোকানে ১৫০ থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকার দামের কম্বল রয়েছে।

সেখানে কম্বল কেনার জন্য দেখছিলেন খুরশেদ আলম নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘বাড়ি থেকে পাঠাল শীতের কিছু কিনতে। দেখি কিছু কিনতে পারি কি না।’