শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষ

কমিটির আগে ঝামেলা চায় না কোনো পক্ষ, ক্যাম্পাস শান্ত

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর পরিবেশ শান্ত রয়েছে। শনিবার ক্লাস বন্ধ থাকায় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও ছিল কম
ছবি : প্রথম আলো

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের পর বর্তমানে শান্ত রয়েছে পরিবেশ। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি নেই। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত চাওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় বেশ কয়েকজন নেতা তদবিরে ব্যস্ত। এ জন্য কেউ এখন ঝামেলায় জড়াতে চাচ্ছেন না। দুই পক্ষের নেতারা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নিয়েছেন।

আজ শনিবার কোনো ক্লাস না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। গতকাল শুক্রবার বিকেলের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ ছিল না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ব্যারাকে পুলিশ সদস্যরা আছেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও শাহপরান হলের মধ্যবর্তী স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে দুই পক্ষই ক্যাম্পাসে অস্ত্রের মহড়া দেয়। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তাদের নিবৃত্ত করেন। আহত দুই শিক্ষার্থী নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী আরিফ আহমদ ও একই বর্ষের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের আশফাকুর রহমানও চিকিৎসা নিয়ে রাতেই হলে ফেরেন। রাত আটটার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি হলের পরিবেশ স্বাভাবিক হয়।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপের ব্যাচের নামকরণ নিয়ে আলোচনার সময় ছাত্রলীগের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সহসভাপতি মামুন শাহের সমর্থক তানভীর ইশতিয়াকের সঙ্গে অন্যদের কথা–কাটাকাটি হয়। পরে সেখানে দুটি পক্ষের সৃষ্টি হয়। এক পক্ষে ছিলেন মামুন শাহের সমর্থক এবং অন্য পক্ষে খলিলুর রহমানের সমর্থক। বিষয়টি সমাধানের জন্য খলিলুর রহমানের সমর্থকেরা তানভীর ইশতিয়াককে শুক্রবার বিকেলে শাহপরান হলের অতিথি কক্ষে ডাকেন। সেখানেও তাঁদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তানভীর ইশতিয়াক সেখান থেকে চলে গিয়ে তাঁর পক্ষের শিক্ষার্থীদের বিষয়টি জানান। এ নিয়েই দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়।

ছাত্রলীগ নেতা মামুন শাহ বলেন, ব্যাচের নামকরণ নিয়েই এ সমস্যার সূত্রপাত হয়েছে। তবে পরে শিক্ষক এবং প্রক্টর তাঁদের নিবৃত্ত করেছেন। ঘটনার সময় তিনি ক্যাম্পাসে ছিলেন না। তিনি এমনটি খবর পেয়েছেন।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমানের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একটি ব্যাচের নামকরণ নিয়ে সমস্যা হয়েছে। সেখানে তাঁর নাম আসার কারণ তিনি বুঝতে পারছেন না। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সজীবুর রহমান, সীমান্তসহ অন্য পক্ষের লোকজনও জড়িত ছিলেন। একটি ব্যাচে এককভাবে কারও কর্মী-সমর্থক নেই। তবে শুক্রবারের বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। শুক্রবারের ঘটনায় দুটি হলের প্রভোস্ট কমিটি প্রতিবেদন দেবে। প্রতিবেদন দেওয়ার পর পরবর্তী প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।