রাস্তা সংস্কারের নামে সাগরনাল চা-বাগানের টিলা কাটার কারণে ঝুঁকির মুখে পড়ে এক চা-শ্রমিকের পরিবার
রাস্তা সংস্কারের নামে সাগরনাল চা-বাগানের টিলা কাটার কারণে ঝুঁকির মুখে পড়ে এক চা-শ্রমিকের পরিবার

জুড়ীতে টিলা কেটে জরিমানা গুনলেন ইউপি সদস্য

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে রাস্তা সংস্কারের নামে অবৈধভাবে চা-বাগানের টিলা কাটার দায়ে প্রদীপ যাদব নামে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যকে মোট ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত এ জরিমানা করেন। প্রদীপ যাদব উপজেলার সাগরনাল ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।

টিলা কাটার ব্যাপারে রাস্তার কাজের প্রকল্প কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য প্রদীপ যাদব বাগানের ব্যবস্থাপকের কোনো অনুমতি নেননি।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অতিদরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) আওতায় সম্প্রতি সাগরনাল ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়ডহর গ্রামের কাঁচা রাস্তার সংস্কারকাজ শুরু হয়। ওই রাস্তার একাংশে সাগরনাল চা-বাগানের কিছু টিলাভূমি পড়েছে। রাস্তার কাজ চলাকালে খননযন্ত্র দিয়ে বাগানের একটি উঁচু টিলা কেটে ফেলা হয়। এ সময় টিলার মাটি ট্রাকে করে অন্যত্র বিক্রিও করা হয়। এতে টিলার ওপরে বসবাস করা এক চা-শ্রমিকের পরিবার ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

টিলা কাটার ব্যাপারে রাস্তার কাজের প্রকল্প কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য প্রদীপ যাদব বাগানের ব্যবস্থাপকের কোনো অনুমতি নেননি।

সাগরনাল বাগানের ব্যবস্থাপক শান্তনু চাকমা অভিযোগ করেন, টিলা কাটার জন্য বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় অনুমতি নেননি সংশ্লিষ্ট প্রকল্প কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য প্রদীপ যাদব। এ বিষয়ে ২৬ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন শান্তনু চাকমা। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানজিদা আক্তারের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি দল দক্ষিণ বড়ডহর এলাকায় অভিযান চালায়।

২০১০ সালের বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে বলা হয়েছে চা–বাগান, পাহাড় বা টিলার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, এ রকম স্থান থেকে মাটি উত্তোলন করা যাবে না। তাই এ আইনে ইউপি সদস্য প্রদীপ যাদবকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করে তা আদায় করা হয়েছে।
সানজিদা আক্তার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট

এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সানজিদা আক্তার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ২০১০ সালের বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে বলা হয়েছে চা–বাগান, পাহাড় বা টিলার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, এ রকম স্থান থেকে মাটি উত্তোলন করা যাবে না। তাই এ আইনে ইউপি সদস্য প্রদীপ যাদবকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করে তা আদায় করা হয়েছে। এ ছাড়া খননযন্ত্রের মালিক আবদুস সালামকে ভবিষ্যতে আর টিলা কাটার কাজে যন্ত্র ব্যবহার না করতে সতর্ক করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার প্রথম আলোয় ‘টিলা কেটে মাটি বিক্রি, ঝুঁকিতে চা-শ্রমিকের পরিবার’ শিরোনামে এ বিষয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।