অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে নিরাপদ কর্মপরিবেশ চেয়ে কুমিল্লার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন করেছেন। আজ সোমবার দুপুরে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন করা হয়।
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ফল পরিবর্তন করে উত্তীর্ণ করার দাবিতে শিক্ষা বোর্ডের ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভের এক দিন পরই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করলেন শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে নেতৃত্বে দেন কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. নিজামুল করিম, সচিব নূর মোহাম্মদ ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আসাদুজ্জামান।
মানববন্ধনে মো. নিজামুল করিম বলেন, ১৫ অক্টোবর এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও কিছু শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছেন। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা যদি মনে করেন, তাঁদের পরীক্ষা ভালো হয়েছে, তাহলে উত্তরপত্র পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদনের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সেটি না করে গতকাল রোববার কিছুসংখ্যক অকৃতকার্য শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের ফটকে তালা লাগিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। ঢাকা বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
মো. নিজামুল করিম আরও বলেন, ‘রোববার শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টা থেকে বিকেল সোয়া ৫টা পর্যন্ত কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডেও বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করেছে। আমরা বারবার হামলার আশঙ্কা করছিলাম। তারা দুপুরের পর ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা বোর্ডের তিনতলায় গিয়ে অটোপাসের দাবিতে আমার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও গালমন্দ করেছে। আমরা তাদের বারবার বলেছি, এবার এইচএসসি পরীক্ষায় সাতটি বিষয়ের প্রাপ্ত ফলাফল এবং বাকি বিষয়গুলো এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের ফলাফল নির্ণয় করা হয়েছে। এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত। কিন্তু এরপরও তারা দাবি করেছে, এসএসসির ফলাফল থেকে সব বিষয়ে ম্যাপিং করে তাদের অটোপাস ঘোষণার জন্য।’
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক মো. জহিরুল ইসলাম পাটোয়ারী, উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (সনদ) মো.সফিকুল ইসলাম, উপসচিব (একাডেমিক) মোহাম্মদ সাফায়েত মিয়া, উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (উচ্চমাধ্যমিক) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে শতাধিক অকৃতকার্য শিক্ষার্থী কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে এসে তাঁদের কৃতকার্য করে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর তাঁরা মিছিল নিয়ে শিক্ষা বোর্ডের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। পরে শিক্ষা বোর্ডের নিরাপত্তাকর্মী ও পুলিশের সদস্যরা তাঁদের ফটকে আটকে দিয়ে কয়েকজনকে ভেতরে গিয়ে বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। চেয়ারম্যানের সঙ্গে এক ঘণ্টার বেশি কথা বলে ‘পাস’ দেখানোর সিদ্ধান্ত না পেয়ে আবার দুপুরের পর তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা শিক্ষা বোর্ডের ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। পরে বিকেলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এরপর সন্ধ্যার দিকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা বোর্ড ছেড়ে চলে যান।