টানা তিন দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার খরস্রোতা ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সঙ্গে পৌর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে ও নদীর তীর উপচে প্রবল বেগে লোকালয়ে ঢলের পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, আজ মঙ্গলবার সকালে চেল্লাখালী নদীর বারোমারী বাজার পয়েন্টে ৩১৪ সেন্টিমিটার ও ভোগাই নদের নালিতাবাড়ী পয়েন্টে ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।
উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত রোববার থেকে নালিতাবাড়ী উপজেলায় ভারী বর্ষণ শুরু হয়। তিন দিনের ভারী বর্ষণ ও উজানে ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে আসা ঢলে ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। এ সময় ভোগাই নদের খালভাঙা, গড়কান্দা নতুন বাসস্ট্যান্ড, গোবিন্দনগর ও চেল্লাখালী নদীর সন্ন্যাসীভিটা ও গোল্লাপাড় এলাকায় নদীর তীর উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করে। ইতিমধ্যে নদীতীরের ওই সব এলাকার দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে নালিতাবাড়ী-গাজীরখামার-শেরপুর সড়কে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহিত হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে নিম্নাঞ্চলের কৃষকের আমন ধানের বীজতলা, সবজিখেত ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ঢলের পানি নেমে গেলে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে বলে ভুক্তভোগী কৃষকেরা জানিয়েছেন।
শিমুলতলা এলাকার বাসিন্দা রনি মিয়া বলেন, ‘ঢলের পানিতে শহর রক্ষা বাঁধ হঠাৎ আজ বিকেলে ভেঙে যায়। এতে আমাদের বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে।’
নালিতাবাড়ী পৌরসভার মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, বাঁধ মেরামতে গতকাল সোমবার রাতে এবং আজ সকালেও কাজ করা হয়েছে। তবে পানির তোড়ে শহর রক্ষা বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে গেছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানির কারণে উপজেলার দুটি নদীতে পানি বেড়ে কিনারা উপচে বসতবাড়িতে ঢুকছে। সাময়িকভাবে পানি বেড়েছে। বৃষ্টি থামলে দ্রুত পানি নেমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হবে।