কুমিল্লার চান্দিনায় হামলার শিকার হওয়ার ১০ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মো. কাউসার (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। কাউসার চান্দিনার মহিচাইল ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতির ভাগনে ছিলেন। কাউসারের পরিবারের অভিযোগ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি বা এলডিপির নেতা-কর্মীরা তাঁকে মারধর করেন।
আজ শুক্রবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর। নিহত কাউসার চান্দিনা উপজেলার মহিচাইল দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর রাতে চান্দিনার মহিচাইল এলাকায় তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
কাউসারের ছোট ভাই মো. ফয়সাল জানান, তাঁদের মামা মো. আবদুল্লাহ চান্দিনার মহিচাইল ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি ছিলেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরদিন এলডিপির লোকজন এসে তাঁদের মামার বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। কাউসার ইলেকট্রিশিয়ান ছিলেন। ভাঙচুরের পর কাউসার তাঁর মামার বাড়িতে বিদ্যুতের লাইন সংস্কার করতে গেলে হামলাকারীরা তাঁকে বাধা দেন; কিন্তু কাউসার বাধা না শুনে মামার বাড়ির কাজ করে দেন।
ফয়সাল আরও বলেন, ৩ সেপ্টেম্বর তাঁর ভাই কাউসার অন্যত্র কাজ শেষে রাত ১১টা দিকে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় একদল লোক তাঁর ভাইকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করেন। হামলাকারীরা সবাই এলডিপির নেতা-কর্মী ও সমর্থক ছিলেন। খবর পেয়ে তাঁরা ভাইকে উদ্ধার করে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তাঁরা এ ঘটনায় মামলা করবেন।
তবে এ ঘটনায় দলের নেতা-কর্মী জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন উপজেলা এলডিপি সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তাহের। তিনি বলেন, ‘আমাদের লোকজন তাকে (কাউসার) মারবে কীভাবে? আমি বিষয়টি ভালোভাবে জানিও না। পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা শুনেছিলাম। এসব ঘটনায় আমাদের লোকজন জড়িত নেই। এটা রাজনৈতিক কোনো বিষয় না।’
চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার সরকার জানান, ওই যুবককে মৃত্যুর বিষয়টি জেনেছেন। তবে ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত নিহত যুবকের পরিবারের কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ বা মৌখিকভাবে কিছুই জানায়নি। অভিযোগ পেলে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে অন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।