লক্ষ্মীপুরে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ মামলা, আসামি ৩৮০৫

লক্ষ্মীপুরে পুলিশ ও বিএনপির নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষের পর সড়কে সতর্কমূলক অবস্থানে পুলিশ
ছবি: প্রথম আলো

লক্ষ্মীপুরে পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। বুধবার রাত ৯টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি ও অপর দুজন বাদী হয়ে আরও দুটি মামলা করেন।

থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, পুলিশের করা মামলা দুটিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী ওরফে এ্যানিকে প্রধান করে ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২ মামলায় অজ্ঞাতনামা ৩ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়। সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর, মানুষের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি ও বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে মামলা দুটি করা হয়।

অন্যদিকে কৃষক দলের কর্মী সজীব হোসেন হত্যার ঘটনায় তাঁর ভাই সুজন হোসেন অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। অন্য মামলার বাদী নুরুল আমিন। তাঁর বাড়ি ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন তিনি।

লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের ওপরে হামলা, সংঘর্ষ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুই মামলারই বাদী পুলিশ। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

লক্ষ্মীপুরে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে মো. সজীব হোসেন (৩০) নামের কৃষক দলের এক কর্মী নিহত হন। সংঘর্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহেল রানাসহ উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

পুলিশ, বিএনপি ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বিকেল চারটার দিকে শহরের গোডাউন রোড এলাকায় বিএনপির নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরীর বাসভবন থেকে পদযাত্রা শুরু করে বিএনপি। পদযাত্রাটি রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতালের কাছে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ সময় জেলা শহরের ঝুমুর সিনেমা হল এলাকা, রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতাল, মটকা মসজিদ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

মামলার বিষয়ে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় আওয়ামী লীগ ও পুলিশ হামলা করে শতাধিক নেতা-কর্মীকে আহত করেছে। এখন উল্টো হয়রানি করার জন্য নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

কৃষক দলের নেতা সজিব হোসেন হত্যাকাণ্ড অরাজনৈতিক বলে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ। আজ দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ব্রিফিং করে তিনি দাবি করেন, লাশ উদ্ধার হওয়া জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সজিব আহতাবস্থায় ফিরোজা ভবন নামের একটি বাসায় ঢোকেন। মৃত্যুর আগে সেখানকার এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর কথা হয়। সজিব ওই ব্যক্তিকে বলেছেন, তিনি বিএনপির কর্মসূচিতে আসেননি। চার-পাঁচজন লোক তাঁকে কুপিয়েছে। তাঁর কাছে তাঁরা টাকা পান। এরপর সজিব আর কোনো কথা বলতে পারেননি।