ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বাগেরহাটের মোংলা বন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। মোংলা বন্দরে পণ্য ওঠানামার কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। পাঁচটি বাণিজ্যিক জাহাজ এই বন্দরে ঢুকতে পারেনি। এ ছাড়া পণ্য খালাস শেষ হওয়ার পরও তিনটি জাহাজ বন্দর ছাড়তে পারেনি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০৩টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
মোংলা উপজেলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ অমরেশ চন্দ্র ঢালী বলেন, নিম্নচাপটি আজ সোমবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতও শুরু হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত জারি করা হয়েছে। যদি প্রতি ঘণ্টায় এটির গতিবেগ ৭৫ থেকে ৮০ কিলোমিটার হয়, তাহলে এটি সাইক্লোনে রূপ নেবে। মঙ্গলবার ভোরের দিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং বাংলাদেশ অতিক্রম করবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, ইতিমধ্যে ঝড় শুরু হয়ে গেছে। উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও সিপিপি (ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি) নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। ১০৩টি সাইক্লোন শেল্টারে উপকূলীয় এলাকার লোকজন আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন। এ ছাড়া তাঁদের জন্য শুকনা খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে। উপজেলা, পৌরসভা ও বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে পৃথক তিনটি নিয়ন্ত্রণকক্ষও খোলা হয়েছে।
সিপিপির মোংলা উপজেলার টিম লিডার মাহমুদ হাসান বলেন, ৭ নম্বর বিপৎসংকেত জারির পর উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় তাঁরা দুটি করে সিগন্যাল পতাকা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। দুর্যোগ মোকাবিলায় দায়িত্ব পালন করছেন ১ হাজার ৩২০ জন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ বলেন, ৭ নম্বর বিপৎসংকেত জারি হওয়ার পর তাঁরা জরুরি সভা করে বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট-৩ জারি করেছেন। এ ছাড়া গতকাল রোববার রাত থেকে বন্দরে অবস্থানরত ১৩টি বাণিজ্যিক জাহাজের কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে। ঝড়ের কারণে সার, কয়লা, গাড়িসহ পাঁচটি জাহাজ এই বন্দরে ঢুকতে পারেনি। এ ছাড়া পণ্য খালাস শেষ হওয়ার পরও তিনটি জাহাজ বন্দর ত্যাগ করতে পারেনি।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবের কারণে পাঁচ থেকে সাত ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য উপকূলের জনপদকে সতর্ক হতে বলা হয়েছে।