বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠছে টেকনাফের সাবারাং এলাকা
বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠছে টেকনাফের সাবারাং এলাকা

সীমান্তের ওপারে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দে টেকনাফে আতঙ্ক

সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপ থেকে আসা মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দে কক্সবাজারের টেকনাফে বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কয়েক দিন ধরে টানা বিস্ফোরণের শব্দে ভেসে আসছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোর চারটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত থেমে থেমে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসে এসব এলাকা থেকে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, টেকনাফের নাফ নদীর পূর্ব পাশে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের কাদিরবিল, মংনিপাড়া ও সুদাপাড়া গ্রাম। বিস্ফোরণের শব্দ আসছে ওই সব গ্রাম থেকেই। শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন বলছেন, মর্টার শেল ও শক্তিশালী গ্রেনেড থেকেই এমন শব্দ আসছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, মিয়ানমারের মংডু টাউনশিপ এলাকায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস। বর্তমানে যেখানে হামলা হচ্ছে, সেখানে অধিকাংশ রোহিঙ্গা নাগরিকের বসবাস। তাঁদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ নাফ নদী অতিক্রম করে বাংলাদেশের টেকনাফে পালিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে নতুন করে আর কোনো রোহিঙ্গাকে ঠাঁই দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, নাফ নদীর পূর্ব পাশে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের অবস্থান। এ শহরের বিপরীতে টেকনাফের সাবরাং এলাকা। কয়েক কিলোমিটার ব্যবধানের কারণে ওপার থেকে আসা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে এপারেও।

টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, টানা চলছে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ। কান ভারী হয়ে আসছে। আজ ভোর থেকে এখন পর্যন্ত কিছুক্ষণ পরপর কেঁপে উঠছে এলাকা। মিয়ানমারের ওপারে বিস্ফোরণে টেকনাফের নাইট্যংপাড়া, চৌধুরীপাড়া, জালিয়াপাড়া, কায়ুকখালীয়পাড়া, পল্লানপাড়া, ইসলামাবাদ, আলিয়াবাদ, কুলালপাড়া, খানকার ডেইলসহ কয়েকটি এলাকায় মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টানা সাড়ে তিন মাস ধরে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির লড়াই চলছে। সম্প্রতি মংডু টাউনশিপের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে দুটি শহরসহ, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৪টি সীমান্তচৌকি, রাচিডং-বুচিডং টাউনশিপের বেশ কয়েকটি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। এখন মংডু শহর দখলের জন্য লড়ছে তারা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, কয়েক দিন সীমান্ত এলাকা কিছুটা শান্ত থাকলেও এখন টানা দিন-রাত থেমে থেমে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার পাশাপাশি বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।