দেশি-বিদেশি পর্যটক ও ভক্তদের জন্য প্রস্তুত রণদার বাড়ির মণ্ডপ

ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার  দুর্গাপূজা শুরু হবে। এ বছর রণদার মণ্ডপসহ ২৪৬টি মণ্ডপে পূজা হবে। 

পূজামণ্ডপের প্রতিমায় শেষ মুহূর্তের তুলির আঁচড় চলছে। গতকাল টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের মহেড়া ইউনিয়নের ছাওয়ালী কর্মকারপাড়া উৎসাহ যুব সংঘে

ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হবে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় ভক্তদের জন্য প্রস্তুত হয়েছে দুর্গার প্রতিমা। এর মধ্যে দেশের ঐতিহ্যবাহী দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার বাড়ির পূজামণ্ডপও এ বছর দেশি-বিদেশি পর্যটক ও ভক্তদের জন্য প্রস্তুত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রণদার বাড়ির শণের ঘরঘেঁষা আশানন্দ মিলনায়তনের সামনে পূজার ঘরসহ আশপাশ নানা রঙে সাজানো হয়েছে। শেষ হয়েছে দুর্গার প্রতিমা বানানোর কাজ। রাঙানো হয়েছে পুরো কুমুদিনী চত্বর। অতিথিদের লৌহজং নদ পারাপারের জন্য দুটি বজরা নৌকা (বড় আকারের ডিঙি) সাজানো হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ বছর রণদার মণ্ডপসহ উপজেলার ২৪৬টি মণ্ডপে পূজা হবে। পৌর এলাকায় ৫০টি, জামুর্কী ইউনিয়নে ৩৮টি, ভাতগ্রামে ৩০টি, মহেড়ায় ১৬টি, ফতেপুরে ১৩টি, গোড়াইয়ে ১৯টি, লতিফপুরে ১৬টি, উয়ার্শীতে ১৬টি, তরফপুরে ৯টি, আনাইতারায় ৭টি, বহুরিয়াতে ১০টি, ভাওড়াতে ৩টি, আজগানায় ২টি, বাঁশতৈলে ২টি ও বানাইলে ১৫টি মণ্ডপে পূজা হবে।

ভারতেশ্বরী হোমসের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক কবি ও সাহিত্যিক হেনা সুলতানা জানান, রণদার পূজামণ্ডপের মূল আকর্ষণ ভারতেশ্বরী হোমসের মেয়েদের আরতি অনুষ্ঠান। এবারও তাদের পরিবেশনায় প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর থেকে পূজার আনুষ্ঠানিকতাসহ আরতি হবে। এ আরতি অনুষ্ঠান প্রতিদিন সন্ধ্যার পর দেবীর বোধন (ষষ্ঠী) থেকে নবমীপূজার দিন পর্যন্ত চলবে। অনুষ্ঠানে কুমুদিনী মেডিকেল কলেজ এবং কুমুদিনী নার্সিং স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেবেন। দেশি-বিদেশি পর্যটকদেরও উপস্থিতি ঘটবে। তাঁদের বরণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আন্ধরা শিল্পী সংঘ পূজামণ্ডপ কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার সাহা বলেন, জন্মের পর থেকেই তাঁরা রণদার মণ্ডপে বিপুল উৎসাহের মধ্য দিয়ে পূজার আনন্দ উপভোগ করেন। প্রবীণদের কাছ থেকে তাঁরা জেনেছেন, ছেলে জন্মের পর থেকে রণদা মহাঅষ্টমীর দিনে হাজারো মানুষের মধ্যে কাপড় বিতরণ শুরু করেন, যা দীর্ঘদিন অব্যাহত থাকে। পূজার সময় ঢাকবাদকেরা ১২ জোড়া ঢাক বাজাতেন। পাশে থাকা  নবহতখানা থেকে যন্ত্রের মাধ্যমে কলকাতা থেকে আনা সানাইয়ের ক্যাসেট বাজানো হতো, যা মানুষকে মুগ্ধ করত। 

কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থার পরিচালক (শিক্ষা) প্রতিভা মুৎসুদ্দি জানান, তিনি (রণদা) সব সময় সর্বজনীন পূজা করতেন। আগে ধর্মান্ধতার কারণে যাঁরা পূজা করতেন, তাঁরা হিন্দু ছাড়া কাউকে মন্দিরে ঢুকতে দিতেন না। কিন্তু রণদা বলতেন, ‘মায়ের সন্তান সবাই।’ এ জন্য মায়ের মন্দিরে সবারই যাওয়ার অধিকার রয়েছে।

ওসি শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম জানান, পূজার উৎসব নির্বিঘ্নভাবে পালনের জন্য কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখা হয়েছে।