মেহেরপুর সদর উপজেলায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকেরা। বক্তারা এ সময় হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। আহত দুই সাংবাদিক হলেন বেসরকারি টিভি চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের প্রতিনিধি রাশেদুজ্জামান ও মেহেরপুরের স্থানীয় পত্রিকা জবাবদিহির সিরাজউদ্দৌজা।
সদর উপজেলার আমঝুপি বাজার এলাকায় গত সোমবার দুপুরে একটি দুর্ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হন ওই দুই সাংবাদিক। প্রত্যক্ষদর্শী ও থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আমঝুপি বাজার এলাকায় দুটি মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন। ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচজন সাংবাদিক তাঁদের ভিডিও ধারণ করছিলেন।
এ সময় সেখানে ১৮ থেকে ২০ জন স্থানীয় যুবক জড়ো হয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন। পরে তাঁরা সড়কের পাশে মানব উন্নয়ন কেন্দ্র নামের একটি বেসরকারি সংস্থায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। হামলার এ দৃশ্য রাশেদুজ্জামান ও সিরাজউদ্দৌলা ধারণ করলে যুবকেরা তাঁদের মারধর করেন এবং মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দুই সাংবাদিককে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা আজ হুমকির মুখে। দেশে সাংবাদিকেরা সংবাদ সংগ্রহ করতে নানান সময়ে পরিকল্পিত হামলার শিকার হচ্ছেন। এতে সমাজের নানান অসংগতি তুলে ধরা দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি না হলে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা গেলে দুর্বৃত্তরা নতুন করে অপরাধ করতে ভয় পাবে। পুলিশ বিভাগকে সঠিক তদন্ত করে প্রত্যেক অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরে হামলার শিকার সাংবাদিক রাশেদুজ্জামান মেহেরপুর সদর থানায় বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। গতকাল মঙ্গলবার জেলা গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান আসামি আকাশ মিয়াকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলুল হক বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় একদল দুর্বৃত্তরা হঠাৎ দুজন সাংবাদিককে লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর শুরু করেন। পূর্বপরিকল্পনা ছাড়া এভাবে হামলা করা যায় না। বিভিন্ন সময়ে মেহেরপুরের সাংবাদিকেরা অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে সংবাদ করেছেন। যারা ওই সময়ে হামলা করেছে, তাদের কয়েকজন অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এসব ক্ষোভ থেকে হামলা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।