কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় খালেদা আক্তার (২৩) নামের এক গৃহবধূকে শ্বাস রোধ করে হত্যার দায়ে তাঁর স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক রোজিনা খান এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ব্যক্তির নাম মো. মোজাম্মেল হোসেন ওরফে রাজু (২৫)। তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শাটিষক গ্রামের নুরুন্নবী প্রকাশ ওরফে নুর আলমের ছেলে। নিহত খালেদা নাঙ্গলকোট উপজেলার পূর্ব দৈয়ারা এলাকার বাসিন্দা মোবারক হোসেনের (৫৫) মেয়ে এবং দণ্ড পাওয়া মোজাম্মেলের স্ত্রী।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী থেকে জানা যায়, বিয়ের পর বেকার হয়ে পড়েন মোজাম্মেল হোসেন। এ নিয়ে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। একপর্যায়ে তিন বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকতে শুরু করেন খালেদা আক্তার। ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান মোজাম্মেল। রাতে স্ত্রী–সন্তানের সঙ্গে ঘুমান। সকালে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে খালেদাকে হত্যা করেন মোজাম্মেল। পরে পুকুর ঘাটে লাশ ফেলে শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর বাবা মোবারক হোসেন বাদী হয়ে মোজাম্মেলকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মোজাম্মেলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০১৯ সালের ৩০ জুন তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে আসামি মোজাম্মেল হোসেনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মো. আমিনুল ইসলাম ও মো. নুরুল ইসলাম। দুই আইনজীবী বলেন, তাঁরা আশা করছেন, উচ্চ আদালতে রায় বহাল রেখে দ্রুত সাজা কার্যকর করা হবে।