ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চার ধাপের তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে। প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার প্রার্থীর হলফনামা ধরে প্রতিবেদন।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম পাঁচ বছর ধরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। এই পাঁচ বছরে তাঁর অস্থাবর সম্পত্তি ৪ গুণ বেড়ে ৪৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা হয়েছে। একই সময়ে তাঁর বার্ষিক আয় ৬ গুণ বেড়ে হয়েছে ১২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রথম ধাপে ৮ মে আটোয়ারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে। স্নাতকোত্তর পাস তৌহিদুল ইসলাম অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক। তাঁর বাড়ি আটোয়ারী উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুখ্যাতি এলাকায়।
নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে তৌহিদুল ইসলামের নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিল। এ ছাড়া ছিল ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দামের একটি মোটরসাইকেল, উপহারের ও ক্রয় করা ২৬ ভরি সোনা, যার মূল্য ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর, ওভেন, মুঠোফোনসহ ইলেকট্রনিকসামগ্রী ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং ৭০ হাজার টাকার আসবাব রয়েছে। ২০২৪ সালে তাঁর নিজের হাতে নগদ অর্থ আগের মতোই ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা রয়েছে। ব্যাংকে জমা আছে ৫ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে সঞ্চয়পত্র আছে ৩০ লাখ টাকার। এ ছাড়া নিজের ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দামের একটি মোটরসাইকেল, ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার ২৬ ভরি সোনা, ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ইলেকট্রনিকসামগ্রী এবং ৭০ হাজার টাকার আসবাব রয়েছে তাঁর।
২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে তৌহিদুল ইসলামের শুধু কৃষি খাত থেকে বার্ষিক আয় ছিল ২ লাখ টাকা। ২০২৪ সালে এসে বার্ষিক আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫৪ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার, ব্যবসা থেকে ২ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা, নিজের শেয়ার সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে ৫ হাজার ১৫৪ টাকা। স্ত্রীর সঞ্চয়পত্র থেকে বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে সম্মানী বাবদ বার্ষিক আয় ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা।
হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তৌহিদুল ইসলামের স্থাবর সম্পত্তিও বেড়েছে ৩ দশমিক ৮০ গুণ। ২০১৯ সালে তৌহিদুল ইসলাম কৃষিজমির পরিমাণ দেখিয়েছিলেন ৫ দশমিক ১৩ একর; যার মূল্য (অর্জনকালীন সময়ের) দেখানো হয়েছিল ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা। আর অকৃষি জমির পরিমাণ দেখানো হয়েছিল ৩ দশমিক ২২ একর; যার মূল্য দেখানো হয়েছিল (অর্জনকালীন সময়ের) ২ লাখ ৫২ হাজার টাকা। ওই সময় একটি দালানবাড়ি দেখানো হয়েছিল ৭৫ হাজার টাকার। এদিকে ২০২৪ সালে এসে একই পরিমাণ জমি ও মূল্য একই দেখানো হয়েছে। তবে এবার ২৫ লাখ টাকার দালানবাড়ির কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
হলফনামার তথ্য সম্পর্কে তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সম্পত্তি বাড়ার ক্ষেত্রে শুধু আমার সম্মানীর টাকাটা যোগ হয়েছে। আমার স্ত্রী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তাঁর অবসরের পর পেনশনের টাকায় ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনে রেখেছেন। আর আগে আমার টিনশেড বাড়ি ছিল। পরে সম্মানীর টাকা দিয়ে সেটাকে একটু ভালো করে বিল্ডিং (ভবন) তৈরি করেছি।’
এই উপজেলায় তৌহিদুল ইসলাম ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আনিছুর রহমান নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।