কুষ্টিয়ায় গড়াই নদে শখের বসে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন এক ব্যবসায়ী। মাছ ধরার একপর্যায়ে নদের পাশে বালুচরে অস্থায়ী টংঘরে শুয়ে ছিলেন। হঠাৎ একটি সাপ তাঁকে ছোবল দেয়। টর্চের আলোতে তিনি সাপটি দেখতে পান। কাছে থাকা লাঠি দিয়ে সাপটি মেরে ফেলেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সাপটি নিয়ে তিনি দ্রুত কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে যান।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার জুগিয়া বটতলা এলাকায় গড়াই নদের পাড়ে এ ঘটনা ঘটে। রাত ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি হন জাহিদুল ইসলাম ওরফে রাজা (৫৪) নামের ওই ব্যবসায়ী। তিনি ওই এলাকার শামসুল আলমের ছেলে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, সাপের কামড়ে অসুস্থ জাহিদুলকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সাপটি সঙ্গে নিয়ে আসায় তা রাসেলস ভাইপার বলে শনাক্ত করা হয়েছে। সাপটি প্রায় সাড়ে তিন ফুট লম্বা। রোগীকে ভ্যাকসিন (অ্যান্টিভেনম) দেওয়া হয়েছে।
পেশায় মৌসুমি ব্যবসায়ী শখের বসে গতকাল রাতে জাল নিয়ে মাছ ধরতে বাড়ির পাশের গড়াই নদে যান। জাহিদুলের ভাষ্য, ‘টংঘরে ঘুমাতেছিলাম। আচমকা চরের থিকিই সাপ উঠি আইসি গায়ের ভেতর নড়াচড়া করে। একপর্যায়ে পায়ে কামড় দিল। লাফ দিলিপারে উল্টা দিকে সাপ পড়ে। নিজে নিজেই পা বাঁধলাম। চরে বালুকাটা লোকজনকে বললাম। ওরা সাপটা ব্যাগে ভরি দিল। বাড়িত আইসি সুজা হাসপাতালে চলি আসি।’
এর আগে ৩ জুলাই পাটখেতে নিড়ানি দেওয়ার সময় জাহিদ প্রামাণিক নামের এক ব্যক্তিকে ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে ছোবল দেয় বিষধর রাসেলস ভাইপার। সাপটিকে মেরে ফেলেন তিনি। জাহিদের বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর চরপাড়া গ্রামে। এরপর তিনি চলে যান স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখান থেকে জাহিদকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে তিনি বাড়ি ফিরেছেন।
বাংলাদেশ জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এস আই সোহেল বলেন, গত কয়েক বছরে গড়াই নদ–সংলগ্ন এলাকায় রাসেলস ভাইপার সাপের উপদ্রপ বেড়েছে। তাদের দল কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন সময়ে ৭টি রাসেলস ভাইপার সাপ উদ্ধার করেছে। বন্যার সময় এই সাপ বেশি দেখা যায়। তিনি সবাইকে সাবধানে চলাচলের পরামর্শ দেন।