দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়েছে, বাড়ির উঠানে খেলায় মেতেছে একটি গৃহপালিত কুকুর আর একটি বুনো শূকরের ছানা। একে অন্যের গায়ে হেলে পড়ছে প্রাণী দুটি। শুধু একটি কুকুরের সঙ্গেই নয়, গ্রামের প্রায় ১২টি কুকুর ও মানুষের সঙ্গে সারা দিন সময় কাটায় বুনো শূকরের ছানাটি।
আজ রোববার মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরের লাউয়াছড়া খাসিয়াপুঞ্জিতে এ ঘটনা দেখা গেছে। এমন দৃশ্য চোখের সামনে দেখে ছবি তুলতে থাকেন অনেকেই।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বাসিন্দা সাজু মারছিয়াং প্রথম আলোকে বলেন, ‘বন্য শূকরটি লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের। বয়স প্রায় পাঁচ মাস হবে। আমাদের পুঞ্জিতে প্রায় দুই মাস ধরে এটি আসে যায়। পুঞ্জির প্রতিটি কুকুরই তার বন্ধু। সারা দিন সব কুকুরের সঙ্গে সে খেলা করে। পুঞ্জির প্রতিটি বাড়ির সামনে সে ঘুরে বেড়ায়। সবাই তাকে ভালোবেসে খাবার খেতে দেয়। সারা দিন খেলাধুলা করে রাতে আবার বনে ফিরে যায় প্রাণীটি।’
লাউয়াছড়া খাসিয়াপুঞ্জিতে ঘুরতে আসা রাজন মালাকার বলেন, বুনো শূকরের সঙ্গে কুকুরের এমন বন্ধুত্ব আগে কখনো দেখা যায়নি। বুনো শূকরের ছানাটা কী সুন্দর করেই না সব কুকুরের সঙ্গে খেলা করছে। পুঞ্জির শিশুদের সঙ্গে খেলা করছে, নিজের মতো করে সব জায়গা ঘুরছে, সে–ও কাউকে বিরক্ত করছে না, তাকেও সবাই আদর করছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এনডেঞ্জার্ড ওয়াইল্ডলাইফের (সিউ) সদস্য ও ওয়াল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার কাজল হাজরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বন্য প্রাণী নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক কিছু দেখেছি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, এক প্রজাতির প্রাণী অন্য প্রজাতির প্রাণী দেখলে ঝগড়া শুরু করে দেয়। কিন্তু লাউয়াছড়া পুঞ্জির বুনো শূকরের ছানাটি যেভাবে পুঞ্জির কুকুরগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছে, এগুলো সচরাচর দেখা যায় না। বনের প্রাণীদের সঙ্গে গৃহপালিত প্রাণীরা তেমন একটা মিল থাকে না। এখানে দুই জায়গার প্রাণীদের মিল দেখে ভালো লাগল।’