দৌলতদিয়ার ৬ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাটের মধ্যবর্তী স্থান চাঁদ খানপাড়া ও ছাত্তার মেম্বার পাড়ায় ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয়রা বালুর বস্তা ফেলছেন
দৌলতদিয়ার ৬ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাটের মধ্যবর্তী স্থান চাঁদ খানপাড়া ও ছাত্তার মেম্বার পাড়ায় ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয়রা বালুর বস্তা ফেলছেন

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ

ভাঙন বন্ধে বালু ফেলছেন স্থানীয়রা

রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন। ভাঙনে ঝুঁকির মুখে পড়েছে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটসহ চার গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবারের বসতভিটা। ভাঙন ঠেকাতে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ পরিস্থিতিতে গ্রামবাসী নিজেরাই টাকা তুলে বালুভর্তি বস্তা নদীর পাড়ে ফেলেছেন। তাঁরা সরকারের কাছে এই স্থানে ভাঙন বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

গত শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, দৌলতদিয়ার ৬ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাটের মধ্যবর্তী স্থান চাঁদ খানপাড়া ও ছাত্তার মেম্বারপাড়ায় ভাঙনে শুক্রবার রাতে নতুন করে প্রায় ২০০ মিটার বিলীন হয়ে গেছে। কয়েকটি পরিবারের ঘর সরিয়ে রাখা হয়েছে। গ্রামের নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর মিলে বস্তায় বস্তায় বালু ভরাট করছে। পরে বালুভর্তি বস্তা নদীর পাড়ে ফেলা হচ্ছে।

চাঁদ খানপাড়ার সরোয়ার মোল্যা বলেন, ‘আমরা কার জন্য অপেক্ষা করব? সরকার, মেম্বার-চেয়ারম্যান কেউ নাই। গ্রামের সবাই মিলে টাকা তুলে ১০ ট্রাক বালু, ১ হাজার বস্তা নিয়ে পাড়ে ফেলার কাজ করছি। কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি।’

প্রবীণ ব্যবসায়ী বারেক সরদার বলেন, ‘চাঁদ খানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ দুই গ্রামের মানুষ ৬ নম্বর ফেরিঘাটসংলগ্ন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। বৃহস্পতিবার স্কুলে যাওয়ার সময় তিন-চারজন নদীতে পড়ে যায়। এখন রাস্তা নাই, নদীতে গেছে। আমরা কোথায় যাব? কেউ খোঁজ নিচ্ছে না। পেছনে যাওয়ার জায়গা নাই। কিছু বস্তা নদীর পাড় দিয়ে ফেললে এভাবে ভাঙন হতো না।’

ছাত্তার মেম্বারপাড়ার শাহজাহান শেখের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, ‘আমাগোর যাওয়ার জায়গা নাই। মরলে এখানে, বাঁচলেও এখানে থাকব। এমপি, চেয়ারম্যান আসে আর বলে, এই কাজ হবে। অথচ কোনো কাজ হলো না। এখন নিজেদের বাড়ির কলাগাছ, টিন যা ছিল, তা–ই দিয়ে ভাঙা ঠেকাচ্ছি।’

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘ভাঙন প্রতিরোধে বিআইডব্লিউটিএকে অনেক বলেছি। তারা পাউবোর দোহাই দিয়ে চুপ থাকছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানকেও জানানো হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ আর পাউবোর ঠেলাঠেলিতে ভোগান্তিতে পড়ছে স্থানীয় লোকজন। কাজ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে গ্রামের লোকজন নিজেরাই ভাঙন ঠেকাতে নেমে পড়েছে।’