মুঠোফোনের সূত্র ধরে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে তাজবীর হোসেন ওরফে শিহান (২৬) নামের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটার দিকে অফিসে যাওয়ার পথে উপজেলার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের হানিফ স্পিনিং মিলের সামনে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত তাজবীর হোসেন উপজেলার মৌচাক জামতলা এলাকার তানভির হোসেনের ছেলে। উত্তরার একটি কল সেন্টারে চাকরি করতেন তিনি। তাঁর বাবা বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা করেছেন।
এ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন তাকওয়া পরিবহনের চালক ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার আমগাছীহান্দা গ্রামের সরওয়ার হোসেন (২৮), সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার কাশিয়াবাড়ি গ্রামের নাজিম উদ্দিন (৩৫), সিএনজিচালিত অটোরিকশার আরেক চালক কুড়িগ্রামের ওলিপুর থানার মধুপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম (৪২), আজমেরী বাসের চালকের সহকারী লক্ষ্মীপুর সদরের জামেরতলী গ্রামের মো. জুয়েল (২৪), তাকওয়া বাসের কর্মী জয়পুরহাটের মোহনপুর গ্রামের মো. মিলন (২৭) এবং চায়ের দোকানি ভোলার চরফ্যাশন এলাকার আনোয়ার হোসেন (৩৫)।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাজবীর হোসেন মৌচাক হানিফ স্পিনিং মিলের সামনে বৃহস্পতিবার ভোরে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। ছিনতাইকারী তাজবীরের হাঁটুতে ছুরিকাঘাত করে তাঁর মুঠোফোন, স্টুডেন্ট আইডি কার্ড, ব্যাংকের কার্ডসহ মানিব্যাগ ও হাতে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেন। পরে ঘটনাস্থলেই তাজবীরের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মামলা করার পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব৵ক্তিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে মাঠে নামে পুলিশ। প্রথমে আনোয়ার হোসেন নামের একজন চোরাই মুঠোফোন কারবারির কাছ থেকে তাজবীরের ফোনটি উদ্ধার করা হয়। পরে আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মূল আসামিদের শনাক্ত করা হয়। এরপর গতকাল সোমবার রাতে সালনা, কোনাবাড়ী, বাসন ও টঙ্গীতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আমিনুল ইসলাম বলেন, হত্যায় জড়িত ব্যক্তিরা একটি ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তাঁরা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে চন্দ্রা, মৌচাক, কোনাবাড়ী, চৌরাস্তা, টঙ্গী এলাকায় ছিনতাই করেন। তাঁদের কাছ থেকে নিহত তাজবীরের মুঠোফোন, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট আইডি কার্ড, ব্যাংকের কার্ডসহ চারটি মুঠোফোন ও টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাঁদের রিমান্ড চাওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) রবিউল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আমিনুল ইসলাম, কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিয়াদ মাহমুদ, মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম প্রমুখ।