ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। আজ রোববার বাদ মাগরিব গ্রামের বাড়ি শৈলকুপা উপজেলার মোহাম্মদপুরে চতুর্থ জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে সকাল আটটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মরহুমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিমানবাহিনীর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে ঝিনাইদহের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামে আনা হয়। এরপর সড়কপথে লাশ আরাপপুরে সংসদ সদস্যের বাড়িতে নেওয়া হয়।
বাদ জোহর শহরের উজির আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে দ্বিতীয় জানাজা ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। আসরের নামাজের পর শৈলকুপা উপজেলা শহরের ডিগ্রি কলেজ মাঠে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ঝিনাইদহ ছাড়াও আশপাশের জেলার শত শত নেতা-কর্মী অংশ নেন।
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম (মিন্টু) দাফনের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। জানাজায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, জেলার অন্য তিনটি আসনের সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও দলীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। জানাজার আগে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য সফিকুল ইসলাম (অপু), সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম, ঝিনাইদহ-২ (হরিণাকুণ্ডু-সদর একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল ও মরহুমের ছেলে জিসান হাই বক্তব্য দেন।
এর আগে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় গতকাল শনিবার সকালে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সংসদ সদস্য আবদুল হাই। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। ১৯ বছর ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসা আবদুল হাই সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী। তিনি দুই ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫২ সালের ১ মে শৈলকুপা উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামে আবদুল হাইয়ের জন্ম। তাঁর বাবার নাম ফয়জুদ্দীন আহম্মদ। ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে জড়ানো আবদুল হাই। ১৯৬৮ সালে ঝিনাইদহের সরকারি কেশব চন্দ্র (কেসি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ঝিনাইদহে স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন। পরে ঝিনাইদহ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও মহকুমা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।
পেশায় ব্যবসায়ী আবদুল হাই ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর পরবর্তী সব কটি নির্বাচনেই সংসদ সদস্য হয়েছেন তিনি। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান ২০০৫ সালে। মৃত্যুর আগপর্যন্ত সেই পদে আসীন ছিলেন তিনি।