স্কুলের পোশাকে নবম শ্রেণির এক ছাত্র দোকানির কাছে সিগারেট চান। এটা শুনে খুব খারাপ লাগে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার পাঁচলিয়া বাজারের মুদিদোকানি মুকুল হোসেনের। আরেক দিন এক কিশোর এসে সিগারেট চাইলে তিনি দেননি। এমন কয়েকটি ঘটনার পর মুকুল হোসেন সিদ্ধান্ত নেন, তাঁর দোকানে বিড়ি-সিগারেট বিক্রি করবেন না তিনি।
এরপর মুকুল হোসেন তাঁর দোকানে লেমিনেট করা কাগজ ঝুলিয়ে জানিয়ে দেন, এখানে তামাকজাত সব পণ্য বিক্রি বন্ধ। পাশাপাশি তামাকজাত পণ্য বিক্রি না করার জন্য অন্যদের উৎসাহিত করেন তিনি।
স্ত্রী মীরজানা, মেয়ে মনিফা তাহাসিন (১২) ও ছেলে মো. মুনতাসির আহম্মেদকে (২) নিয়ে মুকুল হোসেনের সংসার। কৃষিকাজ আর ব্যবসার আয় দিয়ে চলে তাঁর সংসার।
সরেজমিনে পাঁচলিয়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মুকুল হোসেন তাঁর দোকানের সামনের অংশে লেমিনেট করা একটি কাগজ ঝুলিয়ে রেখেছেন। যেখানে লেখা আছে, ‘তামাকজাতীয় দ্রব্য বিক্রয় করা হয় না।’ মুকুল হোসেন বলেন, চার বছর হয়েছে তিনি বাজারের উত্তর পাশে এই দোকান করেছেন। মুদিপণ্যের সঙ্গে বিড়ি, সিগারেট, গুল ও জর্দা সবই ছিল। শুরুর দিকেই দেখতে পান, দোকানের আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কিশোর শিক্ষার্থীরা তাঁর দোকানে এসে সিগারেট চায়। প্রথম দিকে দু-একজন শিক্ষার্থীর কাছে সিগারেট বিক্রি করলেও পরে তাদের কাছে বিক্রি বন্ধ করে দেন। দোকান দেওয়ার মাত্র এক মাসের মাথায় তিনি সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি বন্ধের কাগজটি ঝুলিয়ে দেন।
এ বিষয়ে পাঁচলিয়া বাজার এলাকার বাসিন্দা আবদুল খালেক বলেন, মুকুলের এই উদ্যোগ খুবই ভালো। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে তামাকজাত পণ্য বিক্রি না করার সিদ্ধান্তটি প্রশংসার দাবি রাখে।
পাঁচলিয়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, মুকুল স্টোরের লেখাটি তাঁর চোখে পড়েছে। এটা দেখে খুবই ভালো লেগেছে। সবারই উচিত তামাকজাত পণ্য বর্জন করা।
এ বিষয়ে দোড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আমিনুর রহমান বলেন, ‘ছেলেটি খুব ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা তাঁর এই কাজকে সাধুবাদ জানাই। তাঁর মতো অন্যরা এগিয়ে এলে তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার অনেকটা কমে যাবে।’