ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ হেফাজতে যুবদলের সাবেক নেতার মৃত্যু

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্যসচিব আকরাম হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে পুলিশ হেফাজতে উপজেলা যুবদলের সাবেক এক নেতার মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, আটকের পর থানা থেকে আদালতে পাঠানোর সময় পথে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়।

মারা যাওয়া ওই যুবদল নেতার নাম আকরাম হোসেন (৪০)। তিনি হরিপুর উপজেলার হাটপুকুর গ্রামের আবদুল তোয়াবের ছেলে। তিনি হরিপুর উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব ছিলেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রোববার দিবাগত রাতে হরিপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হরিপুর বাজার এলাকায় অবস্থান করছিলেন। রাত সোয়া দুইটার দিকে তাঁরা খবর পান, হরিপুর ইউনিয়নের হাটপুকুর গ্রামের এনায়েত হোসেনের চাতালের সামনে একদল লোক জটলা করছেন। পৌনে তিনটার দিকে পুলিশ সেখানে পৌঁছায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখানে থাকা লোকজন পালিয়ে যেতে দৌড় দেন। সে সময় পুলিশ আকরাম, শফিকুল ইসলাম (৩২) ও আবু হানিফাকে (৪৯) আটক করে। পরে দেহ তল্লাশি করে আকরাম ও শফিকুলের কাছ থেকে ৪০টি এবং হানিফার কাছ থেকে ৩০টি টাপেন্টাডল (নেশাজাতীয় বড়ি) পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর আটক ব্যক্তিদের থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে তাঁদের নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে পুলিশ।

আজ দুপুরে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের হরিপুর থানা থেকে আদালতে পাঠানোর উদ্যোগ নেয় পুলিশ। পথে আকরাম হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে পুলিশ তাঁকে হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। সেখানে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক আকরামকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. শামীমুজ্জামান বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই আকরামের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যুর ক্ষেত্রে ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব না। এ ছাড়া এ ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির দেহে অভ্যন্তরীণ ক্ষত আছে কি না, যা পরীক্ষা করার সুযোগ নেই।

জানতে চাইলে হরিপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের বলেন, ‘আটকের পর পুলিশ আকরামের সঙ্গে তাঁর স্বজনদের দেখা করতে দেয়নি। পুলিশ হেফাজতে অসুস্থবোধ করলেও তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়নি।’

এদিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন বলেন, ‘পুলিশ হেফাজতে আকরামের মৃত্যু একটা রাজনৈতিক হত্যা। সে থানা হাজতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। আদালতে পাঠানোর আগে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে পুলিশ তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।’

ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন, গ্রেপ্তারের পর আকরাম সুস্থই ছিলেন। থানা থেকে আদালতে আনার সময় আকরাম অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে চিকিৎসার জন্য হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থার তিনি মারা যান।