দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে জমি দখলের অভিযোগে দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শিবলী সাদিকসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে জাল দলিল তৈরি, জমির মালিকদের জোর করে উঠিয়ে দেওয়া এবং সাদা স্ট্যাম্পে সই নিয়ে সাঁওতালদের ৬৭ বিঘা জমি দখলের অভিযোগ আনা হয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর (সোমবার) বাদী হয়ে নবাবগঞ্জ থানায় এ মামলা করেন উকিল হেমরম নামের এক ব্যক্তি।
হেমরম উকিল একই উপজেলার কুচদহ ইউনিয়নের খালিপপুর জাবড়েপাড়ার এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় একজন কৃষক। ওই মামলায় উত্তরবঙ্গের অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র স্বপ্নপুরীর স্বত্বাধিকারী ও দিনাজপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দেলওয়ার হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
মামলায় শিবলী সাদিক ছাড়াও তাঁর ছোট ভাই ও সাবেক উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তাজওয়ার মোহাম্মদ ফাহিম ওরফে নাইন্টি, চাচাতো ভাই তাজওয়ার মোহাম্মদ তাছিম, রাফসান সানি, নাফিজ ইমতিয়াজ ও স্বপ্নপুরীর ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমানসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা প্রভাব খাটিয়ে জমির জাল দলিল তৈরি করতেন। তাঁরা এলাকার নিরীহ লোকজনদের ধরে নিয়ে স্বপ্নপুরীর ভেতরের একটি ঘরে আটকে রাখতেন। সেখানে সাদা কাগজে বা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে জোর করে সই নিয়ে জমি লিখে নিতেন। পরে সেই জমি নিজেদের দখলে নিতেন তাঁরা। বাদীর দাবি, আসামিরা এভাবে জমি জবরদখল করে স্বপ্নপুরী তৈরিসহ অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
উকিল হেমরম এজাহারে উল্লেখ করেন, তাঁর দাদা জটারাম হেমরম, দাদার চাচা নারায়ণ হেমরম ও ভাগা হেমরম মারা যাওয়ার পর ২০০০ সাল থেকে তাঁদের নামে থাকা কুশদহ ইউনিয়নের খালিপপুর মৌজার ২২ একর ৪৫ শতাংশ জমি দখল করেন আসামিরা। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সালের ১৮ আগস্ট সকালে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে জমি থেকে অন্তত ১০০টি গাছ কেটে নিয়ে যান। ওই সব গাছের আনুমানিক মূল্য ১৫ লাখ টাকা। আসামিরা ক্ষমতাধর হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে এত দিন কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেননি।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল ওয়াদুদ প্রথম আলোকে বলেন, জমিজমা জবরদখলকে কেন্দ্র করে গত ৯ ডিসেম্বর নবাবগঞ্জ থানায় মামলাটি হয়েছে। মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার হয়নি। তবে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।