ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌর এলাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে একটি হনুমান অবাধে ঘোরাঘুরি করছে। হনুমানটি কখনো মানুষের ঘরের চালে, কখনো গাছে গাছে ঘুরছে। কখনো কখনো হনুমানটিকে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। এমনকি বাজারের দোকানেও বসে থাকতে দেখা যায়। কেউ খাবার দিলে বেঞ্চে বসে খেয়ে কিছুক্ষণ পর আবার অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ভাঙ্গা অঞ্চলে কখনো হনুমান ছিল না। তাঁদের ধারণা, দলছুট হয়ে কোনোভাবে অথবা কলা-সবজির ট্রাকে হনুমানটি ভাঙ্গায় চলে এসেছে। চার-পাঁচ মাস ধরে হনুমানটি ভাঙ্গা এলাকায় দেখা যাচ্ছে।
হনুমানটি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। হনুমানটি দেখে কেউ আদর করে রুটি-কলা খেতে দিচ্ছেন, আবার কেউ উপদ্রব মনে করে তাড়িয়ে দিচ্ছেন। তবে হনুমানটি কারও শারীরিক ক্ষতি করেছে বলে জানা যায়নি।
হনুমানটি মাঝেমধ্যে ভাঙ্গা বাজার-সংলগ্ন ভাঙ্গা মহিলা কলেজ সড়কের আক্তার হোসেনের চায়ের দোকানের বেঞ্চে গিয়ে বসে। কোনো খদ্দেরকে বিরক্ত করে না। আক্তার হোসেন পাউরুটি দিলে সেটি খেয়ে চলে যায়। আক্তার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘হনুমানটি এসে মানুষের মতো আমার দোকানে বসে। দেড় ঘণ্টা বসে থাকলেও হনুমানটি কোনো ক্রেতাকে কোনো সমস্যা করেনি। আমি পাউরুটি খেতে দিই। বেঞ্চে বসে পাউরুটি খেয়েছে অন্য যেকোনো খদ্দেরের মতোই। তারপর চলে গেছে।’
তবে ভাঙ্গার ঘারুয়া গ্রামের বাসিন্দা কামরুল ইসলাম (৪৩) বলেন, ‘হনুমানটি আমাদের বেশ বিরক্ত করছে। বাড়ির উঠানে কোনো কিছু রাখা যায় না। সব নষ্ট করে ফেলছে।’
ভাঙ্গা পৌরসভার ছিলাধরচর মহল্লার নুরুল হক (৩৭) বলেন, ‘হনুমানটি প্রায়ই আমাদের এলাকা দিয়ে ঘুরে বেড়ায়। গাছের ফলমূল নষ্ট করে। তারপরও আমরা কিছু বলি না। এলাকার মেহমান হিসেবে তার উপদ্রবে আমাদের অসন্তুষ্টি নেই।’
ভাঙ্গা উপজেলা পশুসম্পদ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েক দিন ধরে একটি হনুমান ভাঙ্গার লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তিনি নিজেও দেখেছেন। লেজসহ হনুমানটির দৈর্ঘ্য পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ ফুট হবে। দেখে মনে হয়েছে, হনুমানটির বয়স দুই থেকে আড়াই বছর।
আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, কীভাবে হনুমানটি এলাকায় এসেছে, তিনি জানেন না। মাঝেমধ্যে বন্য প্রাণীকে লোকালয়ে চলে আসতে দেখা যায়। তিনি এলাকাবাসীকে পরামর্শ দিয়েছেন হনুমানটিকে বিরক্ত না করার। হনুমানটিকে বনে ছেড়ে দিয়ে আসার প্রয়োজন হলে বন বিভাগকে দায়িত্ব নিতে হবে।