ভোলায় সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন

হামলা-ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ইউনুছ মিয়া এক সংবাদ সম্মেলন করেন
ছবি: প্রথম আলো

ভোলা সদরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে গতকাল শুক্রবার রাতের সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনুছ মিয়ার সমর্থক মো. নাজিমুদ্দিন বাদী হয়ে শনিবার ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২৪-২৫ জনকে আসামি করে ভোলা সদর থানায় এ মামলা করেন।

সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের জংশনবাজারে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত আনারস প্রতীকের প্রার্থী মো. মোশারেফ হোসেন ও মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মো. ইউনুছ মিয়ার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়।

হামলা-ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ইউনুছ মিয়া এক সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, আনারস প্রতীকের কর্মী-সমর্থকেরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। তাঁর কর্মী-সমর্থকদের বলা হচ্ছে, আনারসের পক্ষে ভোট করতে হবে, নইলে এলাকা ছাড়তে হবে, যার বহিঃপ্রকাশ শুক্রবার রাতের হামলা ও ভাঙচুর। শুক্রবার তাঁর কর্মীদের পিটিয়ে, কুপিয়ে জখম করেছেন আনারস প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন। নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করেছেন। এ অবস্থায় তিনি নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু থাকা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন। তিনি প্রতি ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পর্যাপ্ত আইন প্রয়োগকারী সদস্য মোতায়েনের দাবি করেছেন।

চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ইউনুছ মিয়া আরও অভিযোগ করে বলেন, আনারসের চেয়ারম্যান প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভবনকে তাঁর নির্বাচনী কার্যালয় বানিয়েছেন। কখনো জেলা পরিষদ, কখনো পৌরসভার কক্ষে নির্বাচনী কার্যালয়ের জরুরি বৈঠক করছেন। তাঁর আত্মীয়স্বজন সরকারি শিক্ষকদের তাঁর পক্ষে কাজ করার জন্য জরুরি সভা করেছেন। এটা কীভাবে সম্ভব!

ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের জংশন বাজারে গতকাল শুক্রবার রাতে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়

অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোশারেফ হোসেন বলেন, সংবাদ সম্মেলনে করা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন। নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে তিনিও শঙ্কিত। শুক্রবার রাতে মোটরসাইকেলের প্রার্থীর কর্মী ইলিশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে তাঁর ১৫ জন কর্মীকে আহত করেছেন। তাঁর নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করেছেন। তিনি আরও বলেন, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ভবনে দুটি কক্ষ বরাদ্দ পেয়েছেন। সেখানে নির্বাচনী কার্যালয় বানিয়েছেন। কোনো অন্যায় করেননি।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন মিঞা বলেন, একটি মামলা হলেও কেউ আটক হয়নি। আরেকটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। পরিস্থিতি শান্ত আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে।

এদিকে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসেন সদর, দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন উপজেলার প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি বুঝিয়ে বলেন এবং তা মেনে চলার আহ্বান জানান। ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে ভোলা সদর, দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় বক্তারা বলেন, সবাইকে নির্বাচন কমিশনের আইন মানতে হবে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। যদি কোথাও কোনো আইনের ব্যত্যয় ঘটে, সেটা মেনে নেওয়া হবে না।