রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় চর ও জমি নিয়ে বিরোধের জেরে শ্রমিক লীগের এক নেতাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের কোনাগ্রাম তিন রাস্তার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম আবদুল আজিজ মহাজন। তিনি নারুয়া ইউনিয়নের কোনাগ্রামের আজের আলী মণ্ডলের ছেলে ও নারুয়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি ভূমিহীনদের পক্ষে আন্দোলন করতেন।
নিহত আজিজের ভাই আবদুর রহমান অভিযোগ করেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়েছেন রেজাউল ইসলাম মহাজন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের তিনি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
স্বজন, পুলিশ, স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বালিয়াকান্দি উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে গড়াই নদ। নদের চর নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা চলছে। এক পক্ষের নেতৃত্বে আবদুল আজিজ মহাজন ও চাষি আমজাদ। অপর পক্ষের নেতৃত্বে আছেন শাহাদত হোসেন মাস্টার ও রেজাউল ইসলাম। আবদুল আজিজ গতকাল রাতে পাশের মরাবিলা গ্রাম থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁর সঙ্গে মোহন নামের এক ব্যক্তি ছিলেন। রাত আটটার দিকে কোনাগ্রামের তিন রাস্তার মোড়ে ইলিয়াসের দোকানের পাশে পৌঁছালে বাঁশ দিয়ে তাঁর গতিরোধ করে কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি। এ সময় তিনি মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান। মাটিতে পড়ে গেলে আবদুল আজিজকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে আজিজকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
নারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, চর ও জমিজমা নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্বপরিকল্পিতভাবে আবদুল আজিজের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানার জন্য রেজাউল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তাঁর মুঠোফোন নম্বর বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের ধরে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ।