মানিকগঞ্জের শিবালয়ে চেয়ারম্যানপ্রার্থী আবদুর রহিম খানের এক সমর্থককে লক্ষ্য করে গুলির প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। আজ শুক্রবার বিকেলে আরিচা ঘাটের অদূরে ডাক্তারখানা এলাকায়
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে চেয়ারম্যানপ্রার্থী আবদুর রহিম খানের এক সমর্থককে লক্ষ্য করে গুলির প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। আজ শুক্রবার বিকেলে আরিচা ঘাটের অদূরে ডাক্তারখানা এলাকায়

মানিকগঞ্জের শিবালয়

চেয়ারম্যান প্রার্থীর ছেলের বিরুদ্ধে গুলি করার অভিযোগ, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবদুর রহিম খানের এক সমর্থককে লক্ষ্য করে গুলির অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার বিকেলে উপজেলার আরিচা ঘাটের অদূরে ডাক্তারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী অপর প্রার্থী রেজাউর রহমান খানের ছেলে ফাহিম খান এই গুলি চালিয়েছেন বলে অভিযোগ আবদুর রহিম খানের অনুসারীদের।

এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ বিকেলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রহিম খানের সমর্থকেরা। এতে মহাসড়কের উথলী মোড় থেকে আরিচা ঘাট পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। আবদুর রহিম খান জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। প্রতিদ্বন্দ্বী রেজাউর রহমান খান উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

পুলিশ, লিখিত অভিযোগ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আরিচা ঘাটের অদূরে ডাক্তারখানা এলাকায় রহিম খানের নির্বাচনী কেন্দ্র (ক্যাম্প) রয়েছে। শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে সেখানে পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। পরে দুই পক্ষের কর্মীরা চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর রহিম খানের কর্মী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) জয় ঘোষ সেখানে যান। এরপর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে রেজাউর রহমানের ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক ফাহিম খান এবং ভাতিজা আরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোনায়েম মোন্তাকিন খানসহ ১০ থেকে ১২ জন সেখানে উপস্থিত হন।

জয় ঘোষ বলেন, সেখানে উপস্থিত হওয়ার পর ফাহিম খান নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে তাঁকে লক্ষ্য করে চারটি গুলি করেন। তবে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর ইউপি চেয়ারম্যান মোনায়েম তাঁকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করেন। তবে স্থানীয় নারীরা তাঁকে বাড়িতে নিয়ে লুকিয়ে রাখেন। এ ঘটনায় তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

তবে ফাহিম খান পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনী পোস্টার লাগাতে গেলে রহিম খানের লোকজন তাঁদের কর্মীদের মারধর করেন। এতে তাঁদের দুই কর্মী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে তিনি সেখানে গেলে রহিম খানের কর্মীরা ধারালো দা নিয়ে হামলার চেষ্টা করেন। এতে আত্মরক্ষায় তিনি একটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন।

অবরোধের কারণে ঢাকা–আরিচা মহাসড়কে প্রায় আড়াই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে

এ ঘটনার প্রতিবাদে বিকেল পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থলের কাছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রহিম খানের কর্মী–সমর্থকেরা। সন্ধ্যায় সেখানে উপস্থিত হন মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন মাহমুদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান। ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রউফ সরকার বলেন, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে গত ২৭ এপ্রিল রাতে উপজেলার শিমুলিয়া এলাকায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবদুর রহিম খানের গাড়ি লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রেজাউর রহমানের ছেলে ফাহিম খান এবং ভাতিজা মোনায়েম মোন্তাকিনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দেন রহিম খান। গত ৩০ এপ্রিল ওই ঘটনার প্রতিবাদে ও জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন রহিমের লোকজন। একই দিন ‘মিথ্যা অভিযোগের’ প্রতিবাদে পাল্টা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন রেজাউর রহমানের লোকজন।

২১ মে দ্বিতীয় ধাপে শিবালয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী ছাড়াও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোবারক হোসেনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।