নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বিদ্যালয়ছাত্র ফারহান জাহি হিমেলকে (১৫) মুক্তিপণের জন্য হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তার দুই বন্ধু। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় নলডাঙ্গা আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন আলীর কাছে তাঁরা জবানবন্দি দেন।
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা নিহত হিমেলের বন্ধু। তাঁরা মুক্তিপণের জন্য কুপিয়ে হিমেলকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। আদালত জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।
জবানবন্দি দেওয়া দুজন হলেন উপজেলার সরকুতিয়া তালতলার গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে শিমুল ইসলাম (১৮) ও পাটুল পূর্বপাড়া গ্রামের এক কিশোর (১৭)।
এদিকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া অপর দুই আসামি হাঁপানিয়া গ্রামের শরিফুল ইসলাম (১৮) ও পিপরুল গ্রামের সজল সাহাকে (১৮) গতকাল আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত তাঁদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা তাঁদের নিজ হেফাজতে নিয়েছেন।
নিহত স্কুলছাত্র ফারহান জাহি হিমেল পিপরুল গ্রামের ওমর ফারুকের ছেলে ও পাটুল হাফাঁনিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র। গত বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের একটি পরিত্যক্ত ভবনের ঘর থেকে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার রাতেই জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক চারজন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এ টি এম মাইনুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাফেরা ও ইফতার করার কথা বলে হিমেল বাড়ি থেকে বের হয়। ইফতারের পর থেকে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে থানায় খবর দেন। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অনুসন্ধান করে হিমেলের সঙ্গে মুঠোফোনে সর্বশেষ সজলের যোগাযোগের তথ্য পায়। এর পরপরই পুলিশ সজলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পরে তার অপর এক বন্ধুকে (১৭) আটক করে পুলিশ। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পুরোনো ভবনের ভেতর থেকে ভুট্টাপাতা দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় হিমেলের লাশ উদ্ধার করে।