বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলা থেকে আট মাস পর আজ শুক্রবার ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে রোয়াংছড়ি উপজেলায় এখনো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। গত বছরের ১৭ অক্টোবর এই তিন উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১৪ মার্চ এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরও এক দফা বাড়ানো হয়।
আজ দুপুরে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি এক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে রুমা এবং থানচি উপজেলার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন। গণবিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, গত বুধবার বান্দরবান সেনা রিজিয়ন সদর দপ্তরের পাঠানো চিঠির আলোকে আজ রুমা ও থানচি উপজেলা থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলো। তবে পর্যটকদের দুর্গম এলাকায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। শুধু রোয়াংছড়ি উপজেলা ছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলায় আগের মতো স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকেরা ভ্রমণ করতে পারবেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ের নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) গোপন আস্তানায় সমতলের জঙ্গি গোষ্ঠী জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার জঙ্গিরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তথ্য ছিল। এ কারণে গত ৯ অক্টোবর তিন উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বিত অভিযান শুরু হয়। নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে সে সময় তিন উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা খুশি: রুমা ও থানচি উপজেলা থেকে পর্যটক ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় হোটেল, মোটেল ও অবকাশযাপন কেন্দ্রের মালিক-কর্মচারী, যানবাহনের মালিক-শ্রমিক ও পর্যটনসংশ্লিষ্ট সবাই খুশি হয়েছেন। জেলা শহরের হোটেল আরণ্যকের মালিক জসীম উদ্দিন বলেন, নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকে পর্যটন খাতে জড়িত ব্যক্তিরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর পর্যটকেরা এবার বান্দরবানে বর্ষাকালীন সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ পাবেন। এতে পর্যটন ব্যবসা আবারও চাঙা হবে।
জেলার হোটেল, মোটেল ও অবকাশযাপন কেন্দ্রের মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিন উপজেলার মধ্যে দুই উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় পর্যটন ব্যবসা ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াবে বলে তাঁরা আশাবাদী। রোয়াংছড়ি পুরো উপজেলা থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা না গেলেও পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ দেবতাখুমে ভ্রমণ উন্মুক্ত করে দেওয়া যায় কি না, প্রশাসনের প্রতি তা বিবেচনার অনুরোধ জানান সিরাজুল ইসলাম।