ভোটকক্ষে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সামনে রাখা স্যানিটাইজার আর টিস্যু। ইভিএম মেশিনে আঙুলের ছাপ মেলাতে ভোটারদের হাত পরিষ্কার করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এরপরও অনেক চেষ্টা করে আঙুলের ছাপ মিলছিল না সিরাজুলের। এক কর্মকর্তা তখন তাঁকে বাথরুম থেকে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে আসতে বললেন। একবার, দুবার হাত ধোয়ার পরও মেলে না আঙুলের ছাপ। তিন দফা হাত ধোয়ার পর ভোট দিতে পারলেন সিরাজুল।
ভোট দিতে পেরে সিরাজুলের মুখে হাসি। হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন কর্মকর্তারা। এই চিত্র দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের উপনির্বাচনে রানীশংকৈল উপজেলার ঝাড়বাড়ি গোগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। সকাল থেকে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার বাড়ছে। তবে ভোট গ্রহণের গতি অনেক ধীর। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলছেন, ইভিএম মেশিনে আঙুলের ছাপ মেলাতেই বেশি সময় চলে যাচ্ছে। গোপন কক্ষে ইভিএমে ভোট দিতে ভোটাররা সময় বেশি নিচ্ছেন।
কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তাদের সামনে টিস্যু ও স্যানিটাইজার রাখা। জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ে আঙুলের ছাপ মেলাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মকর্তারা। কাউকে কাউকে হাত ধুয়ে আসতে বলছেন। হাতের ছাপ না মেলায় তাঁদের অনেকেই গোমড়া মুখ নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
আঙুলের ছাপ না মেলায় ভোট না দিয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন ঝাড়বাড়ি গ্রামের সাহেরা খাতুন। তিনি বলেন, ‘কয়েকবার হাত ধুনু, তা–ও ছাপ মিলিছে না। কী করিমো, ভোট না দিয়া বাড়ি ফিরে যাছু।’
এই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ নম্বর বুথে ৩৬৫টি ভোট আছে। এই বুথের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, ‘বয়স্কদের অনেকেরই আঙুলের ছাপ মিলছে না। তাঁদের হাতে স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করে দিচ্ছি। ঝাড়বাড়ি গোগর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের কিছুতেই ছাপ মিলছিল না। তাঁকে তিনবার হাত ধুতে পাঠিয়ে শেষে ছাপ মিলেছে।’
এই ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মঞ্জুর আলম বলেন, ‘ইভিএমে ভোট গ্রহণে কিছুটা দেরি হচ্ছে। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৪০১টি ভোট পড়েছে। ইভিএমে বয়স্কদের আঙুলের ছাপ মেলাতে বেগ পেতে হচ্ছে। বয়স্ক ব্যক্তি, খেটে খাওয়া লোকজনের ছাপ মিলছে না। তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’