কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় তাসলিমা আক্তার ও তাঁর দুই মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় তাসলিমার বড় ভাই কবিরুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হয়ে আজ বুধবার হোসনপুর থানায় মামলা করেছেন। তাসলিমা ও তাঁর দুই মেয়েকে তাঁর বাবার বাড়ি পাকুন্দিয়া উপজেলার নারান্দি ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামে গতকাল মঙ্গলবার রাতে দাফন করা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোসেনপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার। তিনি জানান, ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
বাসুরচর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, তিনি বুধবার সকালে হোসেনপুর থানায় গিয়েছিলেন। সেখান অজ্ঞাতপরিচয় এক নারী, নিহত তাসলিমার শ্বশুরবাড়ির স্বজন, প্রতিবেশীসহ অন্তত ১০ জনকে থানায় আটক দেখেছেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সকালে শাহেদল ইউনিয়নের বাসুরচর গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মঞ্জিল মিয়ার ঘর থেকে তাঁর স্ত্রী তাসলিমা আক্তার (৩৫) ও তাঁর দুই মেয়ে মোহনা আক্তার (১১) ও বন্যা আক্তারের (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মোহনা পঞ্চম শ্রেণির ও বন্যা প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। ছোট্ট একটি টিনের ঘর থেকে লাশগুলো উদ্ধার করে পুলিশ।
থানা-পুলিশ ও নিহতের স্বজনেরা বলেন, মঙ্গলবার সকালে তাসলিমা আক্তারের ঘরের দরজা খোলা ছিল। সকালে বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য মোহনার এক বান্ধবী তাকে ডাকতে আসে। সে এসে দেখে, ঘরের দরজা খোলা অথচ ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ আসছে না। তখন সে ভেতরে গিয়ে দেখে, মোহনা ও তার ছোট বোন এক খাটে পড়ে আছে আর তাদের মা আরেক খাটে পড়ে আছে। এ সময় মোহনার বান্ধবী তাকে হাত ধরে টানলেও সে ওঠেনি। পরে অন্যরা নিয়ে ঘরে ঢুকে দেখে, সবারই শরীর ঠান্ডা। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
তাসলিমার বড় ভাই বিল্লাল মিয়া বলেন, ছয় বছর ধরে তাসলিমার স্বামী মঞ্জিল মিয়া সৌদি আরবে। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তাঁরা কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। তিনি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছেন। কয়েকজন আটক হয়েছেন। আশা করছেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আসল ঘটনা উদ্ঘাটন হবে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, ঘটনাটি কীভাবে ঘটল, সে ব্যাপারে দ্রুতই জানা যাবে। কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে।