প্রতীক বরাদ্দের আগেই ৭০টির মতো মতবিনিময় সভা সেরে ফেলেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান।
প্রতীক বরাদ্দের পর আজ শুক্রবার থেকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরু হবে। কিন্তু তার আগেই আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ৭০টির মতো মতবিনিময় সভা করেছেন। এসব সভায় তিনি নগরবাসীকে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সর্বশেষ গত ৩১ মে এক দিনেই তিনি চারটি মতবিনিময় সভা করেন। আর গতকাল বৃহস্পতিবার করেছেন দুটি সভা।
রাজশাহীতে একটি গালর্স ক্যাডেট করতে চাই। রাজশাহী থেকে কলকাতা সরকারি ট্রেন ও বাস যোগাযোগ চালু করতে চাই।আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান
এ নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম। গত ১১ মে মনোনয়নপত্র উত্তোলনের পর সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, প্রতীক বরাদ্দের আগেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। তবে জাপার ওই প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে কোনো অভিযোগ দেননি।
এসব সভার শুরুতে লোকজনের কাছ থেকে তাঁদের সমস্যার কথা শোনেন খায়রুজ্জামান। পরে সেসবের নোট নেন। এ সময় তাঁর কাছে নগরবাসী এমন সব দাবির কথা তুলে ধরেন, যা তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। তারপরও তিনি সেগুলোর নোট নিয়েছেন। সব সভাতেই একটি স্লোগান থাকে, ‘দৃশ্যমান হয়েছে উন্নয়ন, এবার হবে কর্মসংস্থান’।
■ প্রতীক বরাদ্দের আগেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন জাপার মেয়র প্রার্থী।
■ মতবিনিময় সভাগুলোয় তিনি একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নগরবাসীর সমস্যা ও সংকটের কথা শুনেছেন বলে দাবি খায়রুজ্জামানের।
গত ২৪ এপ্রিল রাজশাহী সিটি করপোরেশনের গণসংযোগ কর্মকর্তার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ওই দিন নগরের শ্রীরামপুর এলাকায় টি-বাঁধসংলগ্ন পিঁপড়া কনভেনশন সেন্টারে মহানগরের বর্তমান ও সাবেক নেতাদের সঙ্গে ‘ঈদ পুনর্মিলনী’ নামের এক মতবিনিময় সভা দিয়ে শুরু করেন খায়রুজ্জামান।
প্রথম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খায়রুজ্জামান বলেন, ‘আগামী ২১ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে চতুর্থবারের মতো আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২১ জুন নির্বাচনে বিজয়ী হতে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’
৩ মে নগর ভবনের অ্যানেক্স সভাকক্ষে রাজশাহীর ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে আয়োজিত সভায় সাবেক এই মেয়র বলেন, ‘রাজশাহীর বিমানবন্দরের উন্নয়ন ও কার্গো বিমান চালুর দাবি উঠেছে। আপনারা হয়তো জানেন, ইতিমধ্যে বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণে দরপত্র হয়েছে। এ ছাড়া নগরের কাঁচাবাজারগুলোর উন্নয়ন করা হবে। তিনটি কাঁচাবাজার নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করেছি।...আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন। তাহলে আমি অনেক কাজ করতে পারব।’
৫ মে রাজশাহী কলেজ অডিটরিয়ামে আনসার ভিডিপি, বিএনসিসি, রোভার স্কাউটস, রেঞ্জার গাইড, রেড ক্রিসেন্ট ও গালর্স গাইডের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খায়রুজ্জামান বলেন, ‘আগামী ৫ বছরে ৫০ হাজার কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে চাই। আমার অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে আরেকবার সুযোগ চাই। কৃষি খাতের উন্নয়ন ও গবেষণার জন্য রাজশাহীতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে চাই। রাজশাহীতে একটি গালর্স ক্যাডেট করতে চাই। রাজশাহী থেকে কলকাতা সরকারি ট্রেন ও বাস যোগাযোগ চালু করতে চাই।’
৭ মে নগর ভবনের সিটি হলরুমে আয়োজিত এক সভায় নগরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আগামী দিনে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিমানবন্দর সম্প্রসারণ, রাজশাহী থেকে কলকাতা সরাসরি বাস ও ট্রেন চালু, নৌ রুট চালুসহ অনেক কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন খায়রুজ্জামান।
এসব মতবিনিময়ের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান বলেন, মতবিনিময় সভাগুলোয় তিনি একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নগরবাসীর সমস্যা ও সংকটের কথা শুনেছেন। ভবিষ্যতে সুযোগ হলে সেগুলোর সমাধানের চেষ্টা করবেন। আজ প্রতীক পাওয়ার পর বিকেলে নগরের ১ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর নির্বাচন মিছিল দিয়ে প্রচার-প্রচারণার কাজ শুরু করবেন।