গোয়ালন্দ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রবল স্রোত থাকায় এক ঘাট থেকে অন্য ঘাটে যেতে বেশি সময় লাগছে।
তৃতীয় দফায় পানি বেড়ে পদ্মার পানি গোয়ালন্দ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে স্রোত বেড়ে যাওয়ায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। লঞ্চ ও ফেরি নদী পাড়ি দিয়ে আসার পর ঘাটে ভিড়তেও সময় লাগছে। পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া ফেরি প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে দৌলতদিয়ায় আসছে। এতে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
পদ্মার গোয়ালন্দ পয়েন্টের পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) সালমা খাতুন জানান, এক সপ্তাহ ধরে তৃতীয় দফায় পদ্মা নদীতে পানি বাড়ছে। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় গোয়ালন্দ পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার কয়েকজন বলেন, আবার পানি বাড়ার সঙ্গে নদীতে তীব্র স্রোত দেখা দেওয়ায় এই রুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। স্রোতের বিপরীতে চলতে আগের চেয়ে ১৫-২০ মিনিট বেশি লাগছে। যানবাহন না থাকায় দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাটে তেমন চাপ নেই। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা যেকোনো গাড়ি সহজে ফেরিতে উঠতে পাড়ছে। বর্তমানে এই রুটে ছোট-বড় ১৩টি ফেরি চালু রয়েছে।
এনায়েতপুরী ফেরির দ্বিতীয় মাস্টার হাসান ব্যাপারী বলেন, এক মাসের বেশি ধরে পানি বাড়ার সঙ্গে স্রোত বেড়েছে। বর্তমানে পানি বাড়ার সঙ্গে স্রোতের গতি অনেক বেড়েছে। আগে দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়ায় পৌঁছাতে একটি ফেরির সময় লাগত ২৫-২৬ মিনিট। পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়ায় যেতে লাগতো ৩৫ মিনিট। পানি বৃদ্ধির পর স্রোত বেড়ে দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়ায় আসতে লাগছে প্রায় ৪০-৪৫ মিনিট। পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া যেতে লাগছে ৫০-৫৫ মিনিট। যানবাহন আনলোড করতে লাগছে ১০-১৫ মিনিট। সব মিলিয়ে এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, স্রোতের গতি অনেক বেড়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচলে আগের চেয়ে ১৫-২০ মিনিট বেশি সময় লাগছে। যানবাহন পারাপার ব্যাহত হওয়ায় ফেরিসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতি দৌলতদিয়া ঘাটের তত্বাবধায়ক নূরুল আনোয়ার বলেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচলেও একই সমস্যা হচ্ছে। নদী উত্তাল থাকায় স্রোতের বিপরীতে ইঞ্জিনের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে এক ঘাট থেকে আরেক ঘাটে পৌঁছাতে লাগছে ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট। অথচ আগে লাগত ২৫ থেকে ৩০ মিনিট।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের ট্রাফিক পরিদর্শক আফতাব হোসেন বলেন, ভরা ও উত্তাল নদী পাড়ি দিতে চালকদের সকর্তকার সঙ্গে লঞ্চ চালাতে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সব ঝুঁকি মোকাবিলা করেই লঞ্চ চলাচল করছে।
দৌলতদিয়া অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, পদ্মার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকার মুলা, করলা, বেগুনের মতো সবজি খেত তলিয়ে গেছে।