সুনামগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে সাধারণ শিক্ষার্থীর প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আসা এক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর রাতেই পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়।
ওই শিক্ষার্থীর নাম মেহেদী হাসান (১৯)। তিনি সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। বাড়ি সদর উপজেলার ভৈইষবেড় গ্রামে। মেহেদীর ভগ্নিপতি মেহেদী হাসান আজ বুধবার দুপুরে প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশকে বলেছি মেহেদী কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। সে নিরীহ, অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কলেজে ছিল। পুলিশও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর গতকাল রাতেই আমাদের কাছে দিয়েছে।’
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, গতকাল বিকেলে তাঁরা কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাত-সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন লাল ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি পালনের কথা ছিল। এ জন্য বিকেলে কলেজ ক্যাম্পাসে জড়ো হচ্ছিলেন ছাত্রছাত্রীরা। এর মধ্যে হঠাৎ করে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় মেহেদীর মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে তাঁকে মারধরের চেষ্টা করেন তাঁরা। পরে মেহেদীকে একটি মোটরসাইকেলে করে তুলে নেওয়া হয়। ওই দৃশ্য একজন ছাত্রী মুঠোফোনে ধারণ করতে গেলে তাঁকে ছাত্রলীগের একজন গালিগালাজ করেন। এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন বলে শিক্ষার্থীরা জানান।
মেহেদী হাসানের এক সহপাঠী বলেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী এসেই কোনো কর্মসূচি করা যাবে না বলে নিষেধ করেন। তাঁরা হুমকি দেন। তখনো সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনেকে আসেননি। পরে আর কর্মসূচি পালন করতে পারেননি তাঁরা। মেহেদী কোনো রাজনীতি করেন না। তিনি কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য আসেন।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান এ বিষয়ে বলেছেন, ‘ছাত্রলীগের কেউ মেহেদীকে মোটরসাইকেলে করে কলেজ থেকে নিয়ে আসেনি বা পুলিশে দেয়নি। সে বহিরাগত হওয়ায় পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। পরে পুলিশই তাঁকে ধরে এনেছে।’
এ বিষয়ে আজ দুপুরে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খালেদ চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।