২০০৮ সালে প্রথম সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হওয়ার পর জাহিদ মালেক দলের মধ্যে নিজের একটি পক্ষ তৈরিতে সক্রিয় হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর প্রভাব বাড়তে থাকে। ২০১৮ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি মানিকগঞ্জে একক আধিপত্য গড়ে তোলেন।
স্বজন ও অনুসারীদের নিয়ে তাঁর গড়া পক্ষ তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কাছে ‘মালেক পার্টি’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে বালুমহাল ও গণপরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতি, অনিয়ম এবং অন্যের জমি দখল করে কম দামে কেনাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। ‘মালেক পার্টির’ মাধ্যমে প্রভাব খাটিয়ে অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন। গত ১৯ আগস্ট তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সম্প্রতি জেলার সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে জাহিদ মালেক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পদের তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, জাহিদ মালেকের কর্মকাণ্ড নিয়ে দলে ক্ষোভ থাকলেও এত দিন তা প্রকাশ্যে আসেনি। তবে সরকারি একটি প্রকল্পে অনিয়ম এবং দলের মধ্যে টানাপোড়েনের কারণে ২০২৪ সালের নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-৩ (সাটুরিয়া ও সদরের একাংশ) আসনে জয়ী হলেও মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি বলে অনেকে মনে করেন।
রাজনীতিতে তিনি সক্রিয় না থাকলেও জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই ইসরাফিল হোসেন ২০০৩ সালে জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক হন। ২০১৫ সালে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ পান। ২০২২ সালে আবার সভাপতি হন তিনি। ২০১৫ সালে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আসেন আফসার উদ্দিন সরকার। ২০১১, ২০১৬ এবং ২০২১ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সদরের গড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হন। আফসার উদ্দিন ২০২২ সালে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ পান।
আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা বলছেন, এভাবে দলের শীর্ষ পদে আত্মীয় ও অনুসারীদের বসান জাহিদ মালেক। সঙ্গে নিজের অনুসারী আরও কয়েকজন নেতাকে নিয়ে গড়ে তোলেন ‘মালেক পার্টি’। সর্বশেষ গত বছরের জুনে ঘোষিত জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক পদে আসেন জাহিদ মালেকের ছেলে রাহাত মালেক। রাহাতের আরেক ফুফাতো ভাই শামীম হোসেন সদর উপজেলার জাগীর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। অন্য দলের লোকজনকেও আওয়ামী লীগে পদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে।
জাহিদ মালেকের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী কামরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেভাবে দল চালানো উচিত, দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চা যেভাবে করা উচিত ছিল, তা থেকে অনেকে সরে গেছেন।’
মানিকগঞ্জের পাঁচটি উপজেলায় সাতটি বালুমহাল রয়েছে। এর মধ্যে মানিকগঞ্জ শহরের কালীগঙ্গা নদীতে বড় দুটি বালুমহাল আছে। এমপি হওয়ার পর জাহিদ মালেক ঘনিষ্ঠজনদের দিয়ে এসবের নিয়ন্ত্রণ নেন। চলতি বছরও জেলা সদরের চামটা-বিলবড়িয়াল বালুমহালটি ২ কোটি ১৪ লাখ টাকায় ইজারা পান জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই শামীম হোসেন। বেউথা-পৌলী বালুমহালটি ইজারা পেয়েছেন ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক ওরফে তুষার। ইজারা মূল্য ২ কোটি ৬৬ লাখ ৮০ টাকা হাজার টাকা। দুজনই বর্তমানে আত্মগোপনে থাকায় বালু উত্তোলন ও ব্যবসা বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্যমতে, ইজারা দেওয়ার নির্ধারিত স্থানের বাইরে খননযন্ত্র দিয়ে বালু তোলায় অনেক কৃষকের ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পাশাপাশি নদীর পাড়ে একাধিকবার মানববন্ধনও করেন এলাকাবাসী। এরপরও জাহিদ মালেকের ক্ষমতার দাপটে অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধ হয়নি বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা।
জয়নগর গ্রামের কৃষক আবু সাঈদ (৫৫) বলেন, ‘নদী কাটতে কাটতে এমন অবস্থা হইছে, এহন বসতবাড়ি ভাঙার উপক্রম হইছে। ড্রেজার (খননযন্ত্র) দিয়্যা নদীর মাটি কাটায় ১৪ বিঘা ফসলি জমি নদীতে চইল্যা গ্যাছে। আমাগো এই ক্ষতির দায়ভার কে নিব?’
আওয়ামী লীগ ও পরিবহন-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমিতির নেতা-কর্মীরা মানিকগঞ্জে বিভিন্ন গণপরিবহন থেকে বছরে প্রায় ১৫ কোটি টাকা চাঁদা তুলতেন। সদর উপজেলার বাসিন্দা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, জাহিদ মালেকের ইন্ধন ছাড়া পরিবহন খাতে বিপুল পরিমাণ চাঁদা তোলা সম্ভব ছিল না।
গণপরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতেন জাহিদ মালেকের আস্থাভাজন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। ৭০০টির মতো যাত্রীবাহী বাসের প্রতিটি থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ টাকা চাঁদা নেওয়া হতো। বছর শেষে বাসে চাঁদার অঙ্ক দাঁড়ায় সাড়ে ১২ কোটি টাকার বেশি। আর জেলায় আড়াই হাজারের বেশি তিন চাকার সিএনজি ও অটোরিকশা থেকে চাঁদা তোলা হতো প্রায় আড়াই কোটি টাকা।
জাহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তবে ২০২১ সালের এপ্রিলে চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর চাঁদাবাজ হটিয়ে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছেন তিনি।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শ্রমিক দলের নেতা-কর্মীরা মানিকগঞ্জ বাস টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নেন।
২০২২ সালের এপ্রিলে সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) একটি কারখানা মানিকগঞ্জে স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। প্রকল্পের সম্ভাব্য এলাকা মেঘশিমুল মৌজায় আগেই জমি কিনে কারসাজি করে দলিলমূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকারি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন জাহিদ মালেক ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এ নিয়ে প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবিত সাড়ে ৩১ একর জমির মধ্যে ১১ একর ১৪ শতক জমি কেনেন জাহিদ মালেকের মেয়ে সিনথিয়া মালেক। তিনি এ জমি ভরাট করে ভিটি শ্রেণিতে পরিবর্তন করেন। মাস সাতেক পর প্রকল্প পাস হয়। তার ২০ দিন আগে কেনা মূল্যের প্রায় দ্বিগুণ দেখিয়ে এসব জমি স্বামী আলতাফ আকমলকে দান করেন সিনথিয়া। এ জমি অধিগ্রহণ করতে গেলে সর্বশেষ মূল্যের তিন গুণ বেশি টাকা দিতে হতো।
প্রস্তাবিত ওই স্থানে জাহিদ মালেকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বিডি সান লিমিটেডের নামে কেনা হয় ৬ একর ৩৯ শতক জমি। মন্ত্রীর ছেলে রাহাত মালেকের মালিকানাধীন রাহাত রিয়েল এস্টেটের নামে কেনা হয় ৩ একর ১২ শতক জমি। এরপর শ্রেণি পরিবর্তন করে একলাফে জমির মূল্য (মৌজা দর) পাঁচ গুণ বৃদ্ধি করা হয়। ভিটি শ্রেণির জমির মৌজামূল্য বাড়ানোর জন্য জাহিদ মালেক তখন আইন মন্ত্রণালয়ে আধা সরকারি পত্রও (ডিও লেটার) দিয়েছিলেন। এর বাইরে মন্ত্রীর ফুফাতো ভাই শামীম মিয়া কেনেন আরও ৫ একর ৫৪ শতক জমি।
এমন পরিস্থিতিতে এই জমিতে প্রকল্প করতে গেলে ভূমি অধিগ্রহণে সরকারের প্রায় ১০০ কোটি টাকা বেশি ব্যয় হবে জানিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক। এরপর বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে জেলা প্রশাসকের অপসারণ দাবিতে আন্দোলনে নামেন জাহিদ মালেকের অনুসারী নেতা-কর্মীরা। নেতৃত্ব দেন সদর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসরাফিল হোসেন।
মেঘশিমুল গ্রামে তিনটি পরিবারের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। আবুল কালাম নামের একজন বলেন, বাড়ির সামনে তাঁর বাবা-চাচার ৭৬ শতক জমি ছিল। তবে প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অপর ফুফাতো ভাই শামীম হোসেন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা আবদুল খালেক জমির চারপাশে জমি কিনে মাটি ভরাট শুরু করেন। বাধ্য হয়ে কম দামে এসব জমি বিক্রি করতে হয়। তখন প্রতি শতক জমি প্রায় এক লাখ টাকা করে বাজারদর থাকলেও তাঁদের ৪২ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।
একই গ্রামের বৃদ্ধ আবদুর রাজ্জাক বলেন, মন্ত্রীর ফুফাতো ভাইয়ের চাপে তাঁদের দুই ভাইয়ের প্রায় ৯০ শতক জমি বিক্রি করেন। সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে লোকজন এসে গ্রামে বসেই সেই জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। তাঁকেও জমি বিক্রি করতে হয়েছে।
২০২৩ সালের জুলাইয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো প্রতিবাদে জাহিদ মালেকের নিজের নাম ও সন্তানের নামে জমি ক্রয়ের তথ্য তুলে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করা হয়।
বক্তব্য জানতে সম্প্রতি কয়েক দফায় ইসরাফিল হোসেন, শামীম হোসেন এবং জাহিদুল ইসলাম ও আফসার সরকারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে বন্ধ পাওয়া গেছে।
মানিকগঞ্জ সদরের গোলড়া চরখণ্ড এলাকায় জাহিদ মালেকের ছেলে রাহাত মালেকের নামে যৌথ মালিকানায় কার্বন হোল্ডিংস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। দুই বছর আগে প্রতিষ্ঠানটি মালিকানা বিক্রি করে দেন বলে নিশ্চিত করেছেন ব্যবস্থাপক হেলাল উদ্দিন। এই প্রতিষ্ঠান গড়তে চাপে ফেলে কম মূল্যে জমি কেনার অভিযোগ রয়েছে জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে। সাটুরিয়ার ধানকোড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ওবায়দুল হক প্রথম আলোকে বলেন, গোলড়া চরখণ্ডে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে তাঁরসহ আত্মীয়স্বজনের প্রায় দেড় একর জমি ছিল। তাঁর নিজের ছিল প্রায় ৭০ শতক। জাহিদ মালেক প্রতিষ্ঠান করতে ২০১৩ সালে ওই জমি জোর করে দখলে নেন। পরে বাধ্য হয়ে এসব জমি লিখে দেওয়া হয়। প্রতি শতক ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা করে দাম নির্ধারণ করা হলেও পরে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।
একই জায়গায় দৌলতপুর উপজেলার ধামশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইদ্রিস আলীর ১৩ শতক জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইদ্রিস আলী বলেন, এমপি থাকা অবস্থায় ২০১৩ সালে তাঁর ওই জমি দখল করেন জাহিদ মালেক। প্রতি শতক সাড়ে ৩ লাখ টাকা করে দাম নির্ধারণ করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত তিনি ওই জায়গার দাম পাননি।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জাহিদ মালেকের অনুসারী দলীয় নেতারা আত্মগোপনে রয়েছেন। আর সরকার পতনের আগেই সপরিবার জাহিদ মালেক দেশ ছাড়েন বলে জানিয়েছেন দলের নেতারা।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে গত ২০ সেপ্টেম্বর জাহিদ মালেকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে। পরে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে খুদে বার্তা পাঠানো হলে তাঁর কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মানিকগঞ্জের সভাপতি ইন্তাজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মালেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে শোনা যাচ্ছে। এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে। তদন্ত করে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে সংস্থাগুলোকে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’
১৫ বছরে জাহিদ মালেকের আয় বেড়েছে ১১ গুণের বেশি। একই হারে বেড়েছে অস্থাবর সম্পদের পরিমাণও। ২০০৮ সালের নবম এবং ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
২০২৪ সালের হলফনামা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট অথবা অন্যান্য ভাড়া, ব্যবসা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত এবং অন্যান্য বাবদ জাহিদ মালেকের বার্ষিক আয় ছিল ৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা, যা ২০০৮ সালে ছিল ৭১ লাখ টাকা। ২০২৪ সালের হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, নগদ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা টাকা, বন্ড ও ঋণপত্র, যানবাহন ও অন্যান্য বাবদ তাঁর অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ৭০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, যা ২০০৮ সালে ছিল ৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। তবে গত ১৫ বছরে তাঁর ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার দায় রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, বাস্তবে জাহিদ মালেকের অস্থাবর ও স্থাবর সম্পদ এবং আয় বেড়েছে আরও বেশি।