বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) সিরাজের গাড়িবহরে হামলার মামলায় বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় তিন ও ধুনট থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। আজ রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাফিজার রহমান (৩৫), মির্জাপুর ইউনিয়নের কৃষক লীগের সভাপতি মাসুদ রানা (৩৯), নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের মির্জাপুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম (৩৩), ধুনট উপজেলার চিকাশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলেফ বাদশা এবং গোঁসাইবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য রফিকুল ইসলাম।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরপুর থানার উপপরিদর্শক জিয়াউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শেরপুরের তিনজনকে গতকাল শনিবার রাতে তাঁদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ রোববার দুপুরের পর তাঁদের আদালতের মাধ্যমে বগুড়ার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এসআই বলেন, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৫ আসনে (শেরপুর-ধুনট) বিএনপি দলীয় প্রার্থী গোলাম মো. সিরাজ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২৪ ডিসেম্বর দুপুরে উপজেলার গোঁসাইবাড়ি বটতলায় বিএনপি নির্বাচনী প্রচারণার মিছিলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তাঁদের সহযোগী সংগঠনের লোকজন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটান। এ ঘটনায় ১৫ নভেম্বর রাতে শেরপুর থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেছেন উপজেলার কুসুম্বি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা। ৭৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৬০ জনকে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্যের গাড়িবহরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে আলেফ বাদশা এবং রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর ১১ ডিসেম্বর দুপুরের দিকে ধানের শিষের প্রচারণার উদ্দেশ্যে গাড়িবহর নিয়ে ধুনট উপজেলা শহরের হোটেল আল আরাফাতের সামনে পৌঁছান জি এম সিরাজ। খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী হাবিবর রহমানের কর্মী-সমর্থকেরা জি এম সিরাজের গাড়িবহরে হামলা চালান।
এ সময় হামলাকারীরা বিএনপির প্রার্থীর গাড়িবহরের দুটি জিপ, দুটি মাইক্রোবাসসহ ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেন। হামলায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী জি এম সিরাজসহ প্রায় ১০ থেকে ১৫ নেতা-কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম গত ৮ অক্টোবর ধুনট থানায় মামলা করেন। এতে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান, তাঁর ছেলে আসিফ ইকবালসহ ৪৬ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়।