কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শহরের পিটিআই সড়কের বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সরেজমিনে সন্ধ্যা সাতটার দিকে বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়ির সামনে বিভিন্ন ধরনের ফুলের টব, তৈরি করা নৌকা সড়কের ওপর পড়ে আছে। নিচতলার এসি, জানালা ও গ্লাস ভেঙে পড়ে আছে। পেছনের রান্নাঘর তছনছ করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা ১১টা থেকে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী ছাত্র-জনতা শহর দখলে নেন। তাঁদের অধিকাংশই বিএনপি ও জামায়াত–শিবিরের নেতা–কর্মী। তাঁরা ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দেন। এ সময় শহরে আওয়ামী লীগের কোনো নেতা–কর্মীকে দেখা যায়নি। পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছোড়াকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে হঠাৎ শহরের পিটিআই সড়কে হানিফের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।
হানিফের বাড়ির পিয়ন আবদুল হান্নান প্রথম আলোকে বলেন, সাড়ে ছয়টার দিকে তিনি বাড়ির ভেতরে ছিলেন। লোহার ফটক তালা লাগানো ছিল। হঠাৎ ২০০–২৫০ মানুষ এসে তিনতলা বাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। তিনি দৌড়ে তিনতলার ছাদে চলে যান। এ সময় ইটের আঘাতও পান তিনি। একপর্যায়ে হামলাকারীরা লোহার দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে খুলে ফেলেন। এ সময় ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী কিশোর–তরুণেরা পুরো বাড়ির গ্লাস, নিচতলার জানালা, দরজা ভাঙচুর করেন। বাড়ির পেছনের দিকে রান্নাঘরে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। গ্যারেজে থাকা একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। বাড়ির সামনে থাকা নেতা–কর্মীদের বসার টিনশেডে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন তাঁরা। চেয়ার টেবিল, ফুলের টব ও অ্যাকুরিয়াম ভাঙচুর করা হয়। ১০ মিনিট ভাঙচুর চালিয়ে তাঁরা দ্রুত চলে যান। পুরো সময়ের মধ্যে পুলিশ, বিজিবি বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য আসেননি বলে তিনি দাবি করেন।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সারা দিন আন্দোলনকারীদের হামলা প্রতিহত করতে পুলিশ ব্যাপক কাজ করেছে। শেষের দিকে সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ সংসদ সদস্যের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। দু–তিন মিনিটের মধ্যেই সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করা হয়।
এদিকে সোয়া সাতটার দিকে বাড়িতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আগুন নেভান। সেখানে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু তৈয়ব বাদশাকে কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে থাকতে দেখা যায়।