৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে নির্বাচন বলেই মানতে নারাজ তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার। তাঁর মতে, এবারের নির্বাচনও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে রূপগঞ্জের নিজ বাড়িতে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে নিজের এমন মতামত জানান তৈমুর।
গতকাল রোববারের নির্বাচনের পর থেকে রূপগঞ্জের পৈতৃক বাড়িতেই অবস্থান করছেন তিনি। শারীরিকভাবে অসুস্থ বিএনপির এই সাবেক নেতা বাইরের কারও সঙ্গে দেখা করছেন না, কথাও বলছেন না তেমন। আজ নির্বাচন বিষয়ে তাঁর সঙ্গে সাংবাদিকেরা কথা বলতে গেলে দলের চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনা না করে নির্বাচন বিষয়ে মন্তব্য করার বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করেন।
তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘আমাদের দলের চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান অন্তরা হুদা এখনো তাঁদের নির্বাচনী এলাকায় আছেন। আমি গুরুতর অসুস্থ। আমরা যৌথভাবে আলাপ-আলোচনা করে তিন দিনের মধ্যে বিবৃতি দেব। সরকার কীভাবে নির্বাচন করল, তা প্রমাণসহ বিস্তারিত তুলে ধরব।’
তবে নির্বাচন কেমন হয়েছে, জানতে চাইলে তৈমুর পরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা কোনো নির্বাচনই না। যেটা হইছে, এটা কোনো নির্বাচনই না। এমনটা কথা ছিল না।’ এমন মন্তব্যের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নৌকার লোকজন রাতেই সব সিল মেরে দিসে। ভোরে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানোর পরেই সব সিল মেরে দিসে। ’১৮-এর মতো সেইম। এক মুহূর্তও নির্বাচন ঠিকঠাক ছিল না।’
এ বিষয়ে নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেছেন কি না, জানতে চাইলে তৈমুর বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমাগো লোক তো বাড়িঘরেই থাকতে পারে নাই। নৌকার লোকজন ভোট কিনল। বহুবার প্রশাসনকে জানাইছি। তারা কোনো ব্যবস্থা নেয় নাই। তারা বায়াজড (পক্ষপাতদুষ্ট) না হইলে এ রকম করে কেমনে।’
নির্বাচন কমিশন নির্বাচন–পরবর্তী সময়েও তাঁর নেতা–কর্মীদের নিরাপত্তা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তৈমুর। তিনি জানান, চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে তাঁর পক্ষে নির্বাচন করায় জেলা মহিলা দলের সাবেক প্রচার সম্পাদক ফাতেমা বেগমের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট হয়েছে। চনপাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য শমসের আলী লোকজন নিয়ে হামলা ও লুটপাটে অংশ নিয়েছেন। ফাতেমার পরিবার গত রাত থেকে এলাকাছাড়া।
তৈমুর বলেন, ‘আমি আগেই বলেছিলাম, আমাদের নির্বাচন যারা করছে, তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। সরকার সে নিরাপত্তা দেয়নি। শমসের আলীর মামলা–মোকাদ্দমা নিয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনের কাছে বলেছিলাম। কিন্তু এ প্রসঙ্গে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
আগামীদিনেও তৃণমূল বিএনপির রাজনীতি করবেন জানিয়ে তৈমুর বলেন, ‘তৃণমূল বিএনপির নামটি এখন ঘরে ঘরে আছে। তৃণমূল বিএনপির প্রতীক সোনালী আঁশ বাংলাদেশের ঘরে ঘরে আছে। আমরা রাজনীতি করব। আমরা আমাদের বক্তব্য দেব। নির্বাচনের সময় কী হয়েছে না হয়েছে, সব তুলে ধরব।’