হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের করিমের খামার মহল্লার জুয়েল মিয়া (৫০) মারা যান। বাবা জুয়েল মিয়ার লাশ বাড়িতে রেখে সকাল ১০টায় মেয়ে জীম আক্তার এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে হাজির হন। তিন ঘণ্টার পরীক্ষা শেষে দুপুরে বাসায় ফেরেন জীম। সন্ধ্যায় বাবার জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়।
জুয়েল মিয়ার তিন মেয়ে ও এক ছেলে। এর মধ্যে জীম আক্তার দ্বিতীয় সন্তান। চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় জীম পৌরসভার নীলারাম স্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে অংশ নিয়েছেন। কুড়িগ্রাম-১ নম্বর কেন্দ্রে তাঁর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জুয়েল মিয়া পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। গতকাল বুধবার তিনি রংপুরে কাঠমিস্ত্রির কাজ করে রাত ১২টায় বাসায় ফেরেন। এরপর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যান। ভোরে তাঁর মেয়ে জীম ফজরের নামাজ পড়তে উঠে দেখেন, বাবার ঘর থেকে গোঙানির আওয়াজ আসছে। পরে তাঁর ডাকাডাকিতে পরিবারের লোকজন উঠে ঘরের বেড়া ভেঙে প্রবেশ করেন। ততক্ষণে জুয়েল মিয়া হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।
করিমের খামার এলাকার যুবক ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘জুয়েল মিয়া আমার প্রতিবেশী। আমি যত দূর জানি, উনি সুস্থ মানুষ ছিলেন। গতকাল রাতে তিনি রংপুর থেকে কাজ করে বাসায় ফেরেন। ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মেয়ে জীম পড়াশোনায় খুব মনোযোগী ছাত্রী। পরীক্ষা শুরুর দিন তার বাবার মৃত্যুতে সে মুষড়ে পড়লেও এক বছর পিছিয়ে যাওয়ার ভয়ে সে পরীক্ষায় অংশ নেয়।’
ওই ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর সহিরন বেগম বলেন, ‘আমার এলাকার জুয়েল মিয়া একজন হতদরিদ্র মানুষ। আজ তাঁর মেয়ের এইচএসসি পরীক্ষা ছিল। তাঁর মৃত্যুতে পরিবারটি অসহায় অবস্থায় পড়ে গেল।’