কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার অভিযোগে বিস্ফোরক আইনে করা একটি মামলায় বাসা থেকে কলেজপড়ুয়া ছেলেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছিলেন পুলিশের সদস্যরা। এ সময় বুকে ব্যথা অনুভব করেন ওই ছাত্রের বাবা। এর তিন ঘণ্টা পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। আজ মঙ্গলবার ভোরে এ ঘটনা ঘটেছে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কালু হাজি সড়কের একটি বাসায়।
নিহত ব্যক্তির নাম সামছুল আলম (৫২)। পরিবারের ধারণা, পুলিশের অভিযানের মধ্যে আতঙ্কিত হয়ে হার্ট অ্যাটাকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। গ্রেপ্তার কলেজছাত্রের নাম সাইফ মোহাম্মদ আলী। তিনি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ছাত্র।
পুলিশ জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ২১ জুলাই লক্ষ্মীপুরে উত্তর তেমুহনী এলাকায় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাবুদ্দিন সাবুর বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের কাজে বাধাও দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনের নামে মামলা করেছে। ওই মামলায় সাইফ মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে সাইফের নাম মামলার এজাহারে নেই। গ্রেপ্তার সাইফ মোহাম্মদ আলী সাইফ মোহাম্মদ আলী ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয় বলেও জানায় পুলিশ।
সাইফ মোহাম্মদ আলীর মা তাহমিনা আক্তার বলেন, সাইফ কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। তাঁর নামে কোনো মামলা ছিল না। পুলিশ তাঁকে জোর করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় সাইফের বাবা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে বুকে ব্যথা অনুভব করে তিনি মারা যান।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে সাইফকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। আদালতে সাইফের জামিনের আবেদন করে তাঁর পরিবার। এ সময় সাইফকে বাবার জানাজায় অংশ নিতে একজন আইনজীবীর জিম্মায় বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত জামিন দেন আদালত।
জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিল মজুমদার ফারুক বলেন, সাইফ সম্প্রতি কোটা আন্দোলন ঘিরে নাশকতার চেষ্টা করছিলেন। কোটা আন্দোলনে তাঁর সক্রিয় থাকার প্রমাণ পুলিশের কাছে রয়েছে। এ ছাড়া তিনি শিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয়।