আইয়ুববিরোধী গণআন্দোলনের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা। শহীদ জোহা দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী জোহার সমাধিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শাহ্ আজম।
শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, আবহমান কাল ধরে ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যে যে আস্থা ও নির্ভরতার সম্পর্ক চর্চা হয়ে এসেছে, তারই প্রতিফলন শামসুজ্জোহার আত্মত্যাগ। যেকোনো বিপ্লবে বা জাতীয় আন্দোলনে শামসুজ্জোহার আত্মদান ছাত্র-শিক্ষকসহ সমগ্র জাতিকে প্রেরণা জোগায়।
দিবসটি জাতীয়ভাবে উদ্যাপনের আহ্বান জানিয়ে শাহ্ আজম বলেন, বর্তমানে ১৮ ফেব্রুয়ারি দিনটি কেবল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়। তবে দিবসটির পালন বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া দরকার। দিবসটি জাতীয়ভাবে পালিত হওয়া উচিত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন উদ্যোগী হলে তাৎপর্যপূর্ণ দিবসটিকে জাতীয়ভাবে পালন করা সহজ হবে।
এ সময় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কারামুক্তি ও সার্জেন্ট জহুরুল হককে হত্যার প্রতিবাদসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবিটি আইয়ুববিরোধী গণআন্দোলনে রূপান্তরিত হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল করতে চাইলে মারমুখী হয় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। তাদের হাত থেকে শিক্ষাথীদের বাঁচাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা সামনে গিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিজের পরিচয় দেন ও শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু তখন তাঁকে গুলি করা হয় এবং রাজশাহী মিউনিসিপ্যাল কার্যালয়ে নিয়ে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়।