কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন ও জহির রায়হানের মৃত্যুর পর এবার মারা গেলেন তাঁদের ঘনিষ্ঠ আরও দুজন। তাঁরা হলেন, গোবিন্দ চন্দ্র বিশ্বাস (৪২) ও শাহজাহান মিয়া (৪০)। গোবিন্দ পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক আর শাহজাহান রিকশাচালক।
মৃত আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘনিষ্ঠজনেরা জানান, ঘটনার রাতে তাঁরা একসঙ্গে আড্ডা দিয়েছেন এবং বাড়ি ফেরেন একসঙ্গে। গোবিন্দ চন্দ্র মারা গেছেন আজ বেলা ১১টার দিকে বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আর শাহজাহানের মৃত্যু হয় গতকাল রোববার দুপুরে। গোবিন্দ পৌর শহরের দোয়ারিয়া মহল্লার বাসিন্দা। আর শাহজাহানের বাড়ি বাজিতপুর উপজেলার গাজীরচর ইউনিয়নের চিন্নাইচর গ্রামে। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কুলিয়ারচরে বসবাস করছিলেন।
তাঁদের সঙ্গে থাকা কুলিয়ারচর পৌরসভার প্যানেল মেয়র হাবিবুর রহমান এখনো ঢাকার একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। হাবিবুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মস্তুফা আজ সোমবার দুপুরে এই চারজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য জহির রায়হানের মরদেহ থানায় আনা হয়েছে। গিয়াস উদ্দিনের মরদেহ এখনো হাসপাতালে আছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা বলেন, গিয়াস উদ্দিন ও জহির রায়হান আওয়ামী লীগের সক্রিয় নেতা ছিলেন। একসঙ্গে তাঁদের মৃত্যুতে পুরো উপজেলায় শোকাবহ পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
রাজনৈতিক সহকর্মী ও ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গিয়াস উদ্দিন ও জহির রায়হান ভালো বন্ধু ছিলেন। গিয়াস উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবেও তিনি দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। জহির রায়হানও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আছেন অনেক দিন ধরে। শনিবার রাতে তাঁরা এক ঘনিষ্ঠজনের বাড়িতে অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন প্যানেল মেয়র হাবিবুর রহমান, হোমিও চিকিৎসক গোবিন্দ চন্দ্র বিশ্বাস ও রিকশাচালক শাহজাহান মিয়া। রাতে ফেরার পর থেকে সবাই অসুস্থ বোধ করেন। পরদিন সকালে হাবিবুর রহমানকে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে গতকাল ঢাকায় পাঠানো হয়। বর্তমানে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। আজ সোমবার ভোররাত চারটার দিকে গিয়াস ও জহিরকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে প্রথমে মারা যান গিয়াস। এরপর হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে জহির রায়হানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। সকাল নয়টার দিকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গোবিন্দ চন্দ্রকে। পরে তিনিও মারা যান।
গোবিন্দ চন্দ্র বিশ্বাসের ভাই আনন্দ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, তাঁর ভাই রোববার রাত নয়টা পর্যন্ত ফার্মেসিতে ছিলেন। সেখানে পেশাগত দায়িত্ব পালনের পর বাসায় ফেরেন। আজ সকাল থেকে অসুস্থবোধ করছিলেন। হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গোবিন্দের মৃত্যু হয়েছে বলে ডাক্তাররা তাঁদের জানিয়েছেন।
জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক মো. বাহার উদ্দিন বলেন, দুজনকে হাসপাতালে ভোররাত চারটার দিকে আনা হয়েছিল।