চট্টগ্রাম শহর থেকে মিনিবাসে সীতাকুণ্ডে আসার পথে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। মো. আবু সৈয়দ (৫৮) নামের ওই ব্যক্তি গত ২৭ সেপ্টেম্বর অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে অসুস্থ হন। এরপর ১০ দিন ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মারা যান তিনি।
আবু সৈয়দের বাড়ি কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায়। তবে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নের জলিল গেট এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।
মো. আবু সৈয়দ সীতাকুণ্ডের যে বাসায় ভাড়া থাকেন, তাঁর সেখানকার প্রতিবেশী ফারুক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, আবু সৈয়দ অসুস্থ হওয়ার খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে দেখতে যান। এ সময় পরিবারের সদস্যরা তাঁকে জানিয়েছেন, ১০ দিন আগে আবু সৈয়দ চট্টগ্রাম নগরের ফিশারিঘাট এলাকায় ইলিশ মাছ কিনতে যান। মাছ না পেয়ে তিনি সীতাকুণ্ডের জলিল গেট এলাকায় ফিরছিলেন। তিনি ফিশারিঘাট থেকে প্রথমে অলংকারের মোড় আসেন। সেখানে দুই ব্যক্তি আবু সৈয়দের সঙ্গে এসে কথা বলেন। কথা বলতে বলতে তাঁরাও সীতাকুণ্ড যাবেন বলে আবু সৈয়দের সঙ্গে একটি মিনিবাসে ওঠেন। এরপর আবু সৈয়দকে তাঁরা কৌশলে কিছু খাইয়ে দিয়ে অজ্ঞান করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা নিয়ে চলে যান ওই দুই ব্যক্তি।
ফারুক চৌধুরী আরও বলেন, এ অবস্থায় মিনিবাসটি শেষ স্টেশন সীতাকুণ্ডের বড় দারোগাহাট পৌঁছানোর পর সব যাত্রী নেমে গেলেও আবু সৈয়দ গাড়িতে থেকে যান। বাসের সহকারী ও চালক তাঁকে ডাকাডাকি করে জাগানোর চেষ্টা করেন। পরে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে তাঁরা তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়। পরে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে দুই দিন চিকিৎসার পর আবু সৈয়দের জ্ঞান ফেরে। এরপর তিনি পরিবারের সদস্যদের ঘটনার বিষয়টি বিস্তারিত জানান। কিন্তু তিন দিন আগে আবার অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করানো হয়।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, আবু সাঈদের মৃত্যুর বিষয়ে গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানা থেকে তাঁদের জানানো হয়। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তিনি যেটুকু জেনেছেন, আবু সৈয়দ অলংকার থেকে সীতাকুণ্ডগামী বাসে উঠেছেন ঠিকই, তবে বাসটি মিরসরাই হয়ে আবার চট্টগ্রাম নগরের দিকে ঘুরে যায়। পরে তাঁকে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ঠিক কী ঘটেছিল, তা বিস্তারিত জানা যায়নি এবং কোন জায়গায় ঘটনা ঘটেছে, সেটিও নির্ধারণ করা যায়নি। এ ঘটনায় মামলা হবে।