নিজেরা টাকা তুলে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার কালজানি নদের ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ শুরু করেছেন এলাকাবাসী
নিজেরা টাকা তুলে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার কালজানি নদের ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ শুরু করেছেন এলাকাবাসী

কুড়িগ্রামে ভাঙন রোধে নদে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করছেন স্থানীয় লোকজন

সরকারি সহায়তা না পেয়ে নিজেরা টাকা তুলে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার কালজানি নদের ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ শুরু করেছেন এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, বারবার সরকারি দপ্তরে যোগাযোগ করেও কোনো সহায়তা পাননি। এ অবস্থায় নিজেদের চাঁদার টাকায় বালুভর্তি বস্তা ফেলে স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন তাঁরা।

শিলখুড়ি ইউনিয়নের কালজানি নদের পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, বর্ষা শেষে নদের পানি পাড় থেকে কিছুটা নিচে নেমে যাওয়ায় ভাঙন বেড়েছে। নদের পাড়জুড়ে ধানখেত কিছুক্ষণ পরপর নদে ভেঙে পড়ছে। ভেঙে যাওয়া ধানখেতের পাশেই স্থানীয় বাসিন্দারা বস্তায় বালু ভরছেন। নানা বয়সের স্থানীয় বাসিন্দারা পাড় রক্ষায় চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাঁদের কেউ বস্তায় বালু ভরছেন, কেউ তা নদীর পাড়ে ফেলছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিন মাস ধরে কালজানি নদে অব্যাহত ভাঙন চলছে। ইতিমধ্যে নদের ভাঙনে উপজেলার সীমান্তবর্তী শিলখুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ ধলডাঙ্গা গ্রামের তিন শতাধিক ঘরবাড়িসহ প্রায় ১০ একর ফসলি জমি নদে বিলীন হয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডে বারবার যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। বাধ্য হয়ে এলাকাবাসীর চাঁদার টাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙনকবলিত এলাকায় বস্তা ফেলে বসতবাড়ি ও ফসল রক্ষার চেষ্টা করছেন। স্থানীয় লোকজনের দাবি, তাঁদের এ চেষ্টার পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামান্য সহযোগিতা পেলে ভাঙন বন্ধ হবে। এতেই রক্ষা পাবে ফসলি জমিসহ ঘরবাড়ি।

উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ ধলডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মোকছেদ আলী বলেন, ‘তিন মাস আগে থেকে নদে ভাঙন চলছে। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেও ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি। বাধ্য হয়ে গ্রামবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে প্লাস্টিকের বস্তা কিনে নদে ফেলছি। তারপরও ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড এগিয়ে এলে ভাঙন রোধ করা সহজ হবে।’

ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম ফরিদুল হক জানান, কালজানি ও দুধকুমার নদের ভাঙনে প্রায় ৩০০ বাড়ি বিলীন হয়েছে। কয়েক শ হেক্টর ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। দ্রুত ভাঙন রোধ করা না হলে তিনটি বিজিবি ক্যাম্প ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়বে। এ ছাড়া বিদ্যুতের খুঁটিসহ প্রায় হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের দুধকুমার ও কালজানি নদের ভাঙনের বিষয়টি আমি জানি। তবে বরাদ্দ না থাকায় ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ মুহূর্তে আমরা পূর্ববর্তী সময়ে হাতে নেওয়া কাজগুলো করছি।’